ট্রাম্পের সফরের প্রাক্কালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ফিলিস্তিনি নিহত

Palestinian killedমধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের পর বর্তমানে ইসরায়েল সফরে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তিনি পবিত্র নগরী বেথেলহাম সফর করেন। বেথেলহামে তার এ সফরের আগ মুহুর্তে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ বছরের ওই কিশোরের নাম রায়েদ আহমাদ রাঈদ।

এ হত্যাকাণ্ডেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই কথিত ‘চুরিকাঘাত চেষ্টার’ অভিযোগ করা হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, বেথেলহামের নিকটস্থ একটি চেকপয়েন্টে মঙ্গলবার ইসরায়েলের একজন বর্ডার পুলিশকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করে ওই কিশোর। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যাকাণ্ডের কিছু সময় পরই বেথেলহাম পৌঁছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি।

এ হত্যাকাণ্ডের পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী এবং অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে এ নিয়ে অন্তত ৮ ফিলিস্তিনি শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে পাঁচ লক্ষাধিক ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর বসবাস। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব বসতি স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের চলমান সফর সম্পর্কে হোয়াইট হাউস বলেছে, আরব অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর সহায়তা নিয়ে আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইত্যাদি দেশের অংশগ্রহণ গুরুত্ব পেতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বহুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। বিগত ওবামা প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। তবে ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার কাল থেকেই ফিলিস্তিনবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে আসছেন। এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ট্রাম্পের সফরকে তাই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল। এমন প্রেক্ষাপটেই ট্রাম্পের বেথেলহাম সফরের আগে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে খুন হয় এক ফিলিস্তিনি কিশোর।

মুসলিম বিশ্বের একটি বড় অংশ ট্রাম্পকে শুরু থেকেই ইসরায়েল-ঘেঁষা বলে মনে করছে। তিনি অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিষয়ে কী অবস্থান নেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ট্রাম্প দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মার্কিন অঙ্গীকার ধরে রাখবেন কি না, তা নিয়েও অনেকের উদ্বেগ আছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আভাস দিয়েছে, নিজের অবস্থানগত জায়গা থেকে তিনি ফিলিস্তিন আর ইসরায়েল দুই পক্ষকে সরাসরি শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিতে পারেন। সূত্র: আল জাজিরা।

/এমপি/