মসুলে এক হামলায় শতাধিক মানুষ নিহতের দায় স্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

আপনজনকে হারিয়ে কাঁদছেন ইরাকিরাইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মসুলে গত মার্চে এক মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ১০৫ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের তদন্তে এ তথ্য স্বীকার করা হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে মার্কিন বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এক হামলায় এটাই সবচেয়ে বড় বেসামরিক মানুষ নিহতের ঘটনা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ মার্চ মার্কিন যুদ্ধবিমান মসুলের পশ্চিমাঞ্চলে আল-জাদিদা এলাকায় একটি কংক্রিটের ভবনে হামলা চালায়। হামলায় ভবনটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। ওই হামলার পরপরই আন্তর্জাতিক মহলে তার তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্তের নির্দেশ দেয় পেন্টাগন।  

এক সেনা বিবৃতিতে জানা গেছে, ওই ভবনটি ধসে পড়ার ফলে সেখানে উপস্থিত ১০১ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়। বিস্ফোরণের প্রচণ্ডতা এতো বেশি ছিল যে, ওই ভবনের নিকটবর্তী একটি বাড়িও ধসে পড়ে।  এতে চারজন নিহত হন।  

তদন্ত কমিটির প্রধান মেজর জেনারেল জো মার্টিন বলেন, ‘আমরা নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। বেসামরিকদের সুরক্ষার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকে। তবে বেসামরিকরা সবচেয়ে সুরক্ষিত থাকবেন আইএসের পতনের মাধ্যমে।’   

ওই তদন্তের বরাত দিয়ে পেন্টাগন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, মার্কিন যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষিপ্ত ৫০০ পাউন্ড ওজনের জিবিইউ-৩৮ বোমা ভবনটির ওপর আঘাত হানার পর জঙ্গি সংগঠন আইএসেরর পক্ষ থেকে পুঁতে রাখা শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ফলে ভবনটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। 

পেন্টাগনের তদন্তে কমিটির সদস্য মার্কিন বিমান বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ম্যাথিউ সি. ইসলার বলেছেন, এখনো ওই ভবনের ৩৬ অধিবাসী নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ভবনটিতে এতো বেশি বেসামরিক মানুষের উপস্থিতি কিংবা আইএস জঙ্গিদের পুঁতে রাখা বোমার কথা মার্কিন বাহিনীর জানা ছিল না।

উল্লেখ্য, ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট এখনও পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার ৭৫৫টি বিমান হামলা চালিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর বেসামরিক নিহতের হার আরও বেড়েছে বলে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়। অন্তত এক হাজার বেসামরিক মানুষ বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। একইভাবে রুশ বিমান হামলায় বিপুল পরিমাণ বেসামরিক মানুষ নিহতের ঘটনা সামনে এসেছে।   

/এসএ/