সবজারের মৃত্যুর খবরে কাশ্মিরে উত্তেজনা, চলছে বিক্ষোভ-সহিংসতা

কাশ্মিরের উত্তেজনার ছবি
কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন হিযবুল মুজাহিদীনের কমান্ডার সবজার আহমেদ ভাট নিহত হওয়ার খবরে উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মিরের অন্তত ১০টি স্থানে বিক্ষোভ-সহিংসতা শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হওয়ার খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাশ্মিরের পুলওয়ামা জেলার ত্রালের সাইমুহ গ্রামের একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সবজার ও তার এক সহযোগী ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে গোপন খবর ছিল। শনিবার সকাল থেকে ৪২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানরা কথিত এনকাউন্টার শুরু করে। এক ঘণ্টা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পর সবজার ও তার সহযোগী নিহত হন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সবজার আহমেদের মৃত্যুর খবর পেয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মির। আল জাজিরা জানায়, সবজারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরাসহ হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমে আসে। 'গো ইন্ডিয়া গো ব্যাক' উই ওয়ান্ট ফ্রিডম' এসব স্লোগান দিতে থাকে তারা। বেশ কয়েকটি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে বিক্ষোভকারীরা। আর বিক্ষুব্ধদের ঠেকাতে  পুলিশ তাদের ওপর শটগান পেলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের অভিযোগ, হোয়াট’স অ্যাপ ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীরা পাথর ছোড়ার জন্য অন্যদের প্রভাবিত করছে। কাশ্মিরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ার জন্যও কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ফেসবুক, টুইটারসহ ২২টি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ওপর গত মাসে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ১২ ঘণ্টার মাথায় আবারও তা বন্ধের পরিকল্পনা করছে তারা। গত মাসে সাইটগুলো নিষিদ্ধ করার সময় বলা হয়েছিল, এগুলো ব্যবহার করে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বছর নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সবজারের পূর্বসূরী হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হন। এরপর মেহমুদ গজনবি ওরফে জাকির মুসাকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে জাকির আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ায় তাকে সংগঠন থেকে বের করে দেওয়া হয়। জাকিরের স্থলাভিষিক্ত হন বুরহানের বন্ধু সবজার। তাকে বুরহানের ডান হাত বলেও উল্লেখ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।  

/এফইউ/