সবজার নিহতের পর বিক্ষুদ্ধ কাশ্মিরে ‘কারফিউর মতো’ বিধিনিষেধ

বিক্ষুব্ধ কাশ্মিরকাশ্মিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘কারফিউর মতো’ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। শনিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন হিযবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার সবজার আহমেদ ভাট নিহত হওয়ার খবরে উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা পরিণত হয় বিক্ষোভের অগ্নিকূণ্ডে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর জানিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের সাত পুলিশ স্টেশন খানিয়ার, নৌহাট্টা, সফাকাদাল, এমআর গঞ্জ, রাইনাওয়ারি, ক্রালহুদ এবং মাইসুমার অধীনস্থ এলাকায় ওই ‘কারফিউর মতো’ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পরীক্ষার প্রবেশপত্র থাকলে শিক্ষার্থীরা এ কারফিউতে ছাড় পাবেন। এটা শিক্ষার্থীদের ‘কারফিউ পাস’ বলে বিবেচিত হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামীকাল সব কলেজ ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বিধিনিষেধ উত্তর কাশ্মিরের অনন্তনাগ, পুলওয়ামা এবং সোপিয়ান জেলাতেও আরোপ করা হয়েছে। বাড়গাম ও গান্দেরবাল জেলায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।  

সবজার ভাট (বামে) ও বুরহান ওয়ানি (ডানে)

শুক্রবার সন্ধ্যার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাশ্মিরের পুলওয়ামা জেলার ত্রালের সাইমুহ গ্রামের যে বাড়িতে সবজার ও সহযোগী অবস্থান করছিলেন, সেটি ঘিরে ফেলে পেলে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শনিবার সকাল থেকে ৪২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানরা কথিত এনকাউন্টার শুরু করে। এক ঘণ্টা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পর সবজার ও তার সহযোগী নিহত হন। এ সময় এক বভেসামরিক ব্যক্তিও নিহত হন বলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।  

সবজার নিহতের পর বিক্ষুব্ধ কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সবজারকে ত্রালের রাতসুনা এলাকায় দাফন করা হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। সবজার নিহতের প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্স দুইদিনের হরতালের ডাক দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর জুলাইয়ে তৎকালীন হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। সে সময় গড়ে উঠা গণআন্দোলনে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর বেপরোয়া গুলিতে প্রায় ১০০ জন নিহত হন। বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মিলিয়ে আহত হন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলে কারফিউ এবং হরতাল।

/এসএ/