খাবার আমদানিতে তুরস্ক ও ইরানমুখী হচ্ছে কাতার

nonameসৌদি আরবের নেতৃত্বে কাতারের সঙ্গে ছয় আরব দেশের সম্পর্ক ছিন্নের ঘটনায় খাবার আমদানিতে তুরস্ক ও ইরানমুখী হচ্ছে দোহা। এরইমধ্যে দেশ দুটির সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছেন কাতারি কর্মকর্তারা। বুধবার দেশটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তুরস্ক, ইরান এবং অন্য দেশগুলো থেকে খাদ্য ও পানি সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

এতোদিন পর্যন্ত কাতারে খাদ্য সামগ্রীর প্রধান সরবরাহকারী দেশ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। কিন্তু দেশগুলোর পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার ফলে যে কোনও ধরনের খাদ্যঘাটতির ঝুঁকি মোকাবিলায় খাবার আমদানির এ নতুন বাজারের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

কাতার এয়ারওয়েজ-এর কার্গো ফ্লাইটের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রী দেশে নিয়ে আসা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা রয়টার্স-কে বলেন, গত চার সপ্তাহ ধরে বাজারে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের সরবরাহ রয়েছে। এছাড়া সরকারিভাবেও বিশাল মজুদ রয়েছে।

তুরস্কের রফতানিকারক সংস্থার প্রধান রয়টার্সকে বলেন, কাতারের খাদ্য ও পানির চাহিদা পূরণে তুর্কি রফতানিকারকরা প্রস্তুত রয়েছেন।

এদিকে ছয় আরব দেশের সম্পর্ক ছিন্নের ঘটনায় কাতারি নাগরিকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দোহা। এক বিবৃতিতে কাতারের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে খাবারের পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে। দামও স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তাই এসব নিয়ে কাতারিদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।

noname

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভোগ্যপণ্যে রয়েছে। সরকার এটা নিশ্চিত করছে যে, বিদ্যমান কূটনৈতিক সমস্যায় নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না।

কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই দোহার পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ যখন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তখন মঙ্গলবার (৬ জুন) দেশটির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৫ জুন) কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের ৬ দেশ। প্রথমে সৌদি আরব ও বাহরাইন এবং পরে তাদের ধারাবাহিকতায় মিসর,সংযুক্ত আরব আমিরাত,লিবিয়া এবং ইয়েমেন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ইয়েমেনে কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের আরব জোট থেকেও বাদ দেওয়া হয় কাতারকে। সম্পর্ক ছিন্নকারী দেশগুলো ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপও ঘোষণা করে।

এমন উত্তেজনাপূর্ণ প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার এরদোয়ান জানান, তিনি কাতারের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী। কাতারের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে সমর্থন দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য হলে নিজেই ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করবেন বলেও জানান এরদোয়ান। আঙ্কারায় দেওয়া এক ভাষণে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কাতারের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তাকে আমরা ভালো বলে মনে করি না। কাতারের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক বজায় থাকবে এবং ভবিষ্যতে সে সম্পর্ক আরও ভালো হবে। আমাদের কঠিনতম সময়ে পাশে থাকা সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় থাকবে।’

/এমপি/