মানবাধিকারবিরোধী ভূমিকা, মিয়ানমার থেকে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

রেনাটা লক ডেসালিয়েন
মিয়ানমারে নিযুক্ত শীর্ষ কর্মকর্তা রেনাটা লক ডেসালিয়েনকে সরিয়ে নিচ্ছে জাতিসংঘ। কূটনৈতিক ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী কমিউনিটির সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, মানবাধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নিয়ে তৎপর না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে রেনাটার বিরুদ্ধে।

রেনাটা লক-ডেসালিয়েনকে মিয়ানমার থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘের এক মুখপাত্র। মিয়ানমারে রেনাটা লকের নীরব ভূমিকার কারণে  এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না বলে জানান ওই মুখপাত্র। তবে রেনাটার দাবি, তার কাজ ধারাবাহিকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ নথি হাতে পাওয়ার দাবি করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্থাটি ‘অভ্যন্তরীণ উত্তেজনায় আক্রান্ত’ এবং ‘ব্যাপকভাবে অকার্যকর’ হয়ে পড়েছে।   

গতবছর মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ ওঠে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ আনে। রোহিঙ্গা নির্যাতন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’র শামিল বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। তবে সেসময় রহস্যজনকভাবে নীরব ছিল মিয়ানমারে অবস্থানরত জাতিসংঘের দলটি। সে সময় রেনাটা লক ডেসালিয়েন কিংবা তার মুখপাত্র এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র তথ্যও দেননি। এমনকি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসার পর সাংবাদিকদের কিছু বলতেও অস্বীকৃতি জানাতেন তিনি। বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মানবাধিকার ও সহায়তাকর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না।

সেসময় রেনাটার বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের নিয়ে কথা বলার বদলে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে বেশি আগ্রহী ছিলেন রেনাটা।

বিবিসি জানায়, এই মুহূর্তে ছুটিতে রয়েছেন রেনাটা। তবে রেনাটাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,মিয়ানমারে তাকে আর দায়িত্ব পালন করতে হবে না। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ বছরের পরিবর্তে সাড়ে তিন বছরেই মিয়ানমার থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে রেনাটা লক ডেসালিয়েনকে।

/এফইউ/