আরও একটি আদালতে ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন খারিজ

ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
ছয় মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাটি পুনর্বহালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। সোমবার (১২ জুন) সান ফ্রান্সিকোভিত্তিক নাইনথ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলস-এ আবেদনটি খারিজ হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় কোনও ফেডারেল আদালতে আবেদনটি প্রত্যাখ্যাত হলো। এর আগে গত মাসে ভার্জিনিয়াভিত্তিক ফোর্থ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলসও নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।

প্রথম মুসলিম নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে ট্রাম্প যে সংশোধিত নিষেধাজ্ঞাটি দিয়েছিলেন তা হাওয়াইয়ের ফেডারেল বিচারপতিরা স্থগিত করে দেন। আর সে স্থগিত হওয়া নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টা চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। সোমবার নাইনথ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলস এর তিন বিচারপতির প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান অভিবাসন আইনের লঙ্ঘন। তবে আদেশটি অসাংবিধানিক কিংবা মুসলিমদের জন্য বৈষম্যমূলক কিনা তা উল্লেখ করা হয়নি।

আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় একটি টুইট করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘যেমনটা ধারণা করা হয়েছিল আবারও তেমনই করেছে নাইনথ সার্কিট কোর্ট। আমাদের দেশের ইতিহাসের এ বিপজ্জনক সময়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে।’

ক্ষমতা গ্রহণের পরই ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে এক নির্বাহী আদেশে সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশগুলো হলো- ইরাক, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন। যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদীদের প্রবেশ বন্ধের যুক্তি দেখিয়ে ওই আদেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু সমালোচকরা একে বৈষম্য বলে আখ্যায়িত করেন। নোবেল বিজয়ী শিক্ষা অধিকারকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা,বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ট্রাম্পের এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেন।
পরে সিয়াটলের একজন বিচারক ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও সান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করেন।

এরপর সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর স্থগিত হয়ে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে ৬ মার্চ ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নতুন জারি করা নিষেধাজ্ঞায় আগের তালিকায় থাকা ইরাককে বাদ দেওয়া হয়। তবে অপর ছয়টি দেশের নাগরিকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। সেই নিষেধাজ্ঞাও আইনি চ্যালেঞ্জে পড়েছে। ম্যারিল্যান্ড এবং হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের আদালত এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এই নিষেধাজ্ঞা বৈষম্যমূলক জানিয়ে ট্রাম্পের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন ফেডারেল বিচারক। গত ২৫ মে ভার্জিনিয়াভিত্তিক ফোর্থ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলসে ম্যারিল্যান্ড আদালতের রুলটি বহাল রাখার পর, সুপ্রিমকোর্টের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হোয়াইট হাউস। 

/এফইউ/