লন্ডনে আগুন: প্রাণ বাঁচাতে জানালা দিয়ে ফেলা হয় শিশুদের

গ্রেনফেল টাওয়ারের আগুন নেভানোর কাজ চলছে

পশ্চিম লন্ডনে গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগার পর জীবন বাঁচাতে শিশুদের ছুড়ে ফেলা হচ্ছিলো বলে জানা যায়। বুধবার রাত একটার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার পর প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই জানালা দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়েছেন। এমনকি শিশু সন্তানকেও নিরাপদে রাখার জন্য জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।

সামিরা লামরানি নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, অনেকের মতো এক নারীও তার শিশু সন্তানকে বাঁচাতে 'নয় বা দশ তলা থেকে' ছুঁড়ে ফেলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘সে সময় নিচেও ভিড় জমেছিল, এক নারী জানালা থেকে চিৎকার করছিল যে সে তার সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলবে। কেউ যেন শিশুটিকে নিচে থেকে ধরে সেই আহ্বানও জানাচ্ছিল ওই নারী।’

নিচের ভিড় থেকেই একজন দৌড়ে জানালা থেকে ছুঁড়ে ফেলা শিশুটিকে ধরতে সক্ষম হয় বলে জানান সামিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভবনটির অনেক বাসিন্দা জানালায় দাড়িয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল।

সামিরার মা লামরানি বলেন, ‘তাদের আশ্বস্ত করছিলাম যে যতটা সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করছি আমরা, ৯৯৯ -এ কল করেছি। কিন্তু তাদের চোখেমুখে আতঙ্ক আর মৃত্যুর ভয়তো ছিলোই।’ একজনকে ঘরে তৈরি প্যারাসুট নিয়ে ভবনের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়তেও দেখেছেন লামরানি।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা তামারা জানান, তিনিও দেখেছেন এক নারী তার শিশুকে জানালা থেকে ছুঁড়ে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘খুব সম্ভবত পাঁচ বা ছয়তলা থেকে তাকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। শিশুটি হয়তো বেঁচে গেছে। আমরা দেখেছি মানুষ কিভাবে উড়ে উড়ে পড়ছিল জানালা দিয়ে।’

পশ্চিম লন্ডনের ওই ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। ৭০ জনেরও বেশি মানুষকে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা আশংকাজনক। অনেকেই আহত ও নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে নিহতদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। 

আগুন লাগার আগে নর্থ কেনসিংটনের ঐ ভবনটিতে সংস্কার কাজ চলছিল। সেসময় ভবনের বাসিন্দাদের অনেকেই গুরুতর অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে সাবধান করেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে, ঠিক আগুন লাগার কারণ এখনো পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে পারেনি।

সূত্র: বিবিসি

/এমএইচ/