গ্রেনফেলের ভয়াবহতা দীর্ঘদিনের অবহেলার ফলাফল: সাদিক খান

সাদিক খান
গ্রেনফেল টাওয়ারের আগুনের ভয়াবহতাকে সরকার ও স্থানীয় কাউন্সিলের ‘বছরের পর বছর ধরে অবহেলার’ ফলাফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তার মতে, এটি ‘প্রতিরোধযোগ্য দুর্ঘটনা’ ছিল। রবিবার (১৮ জুন) স্থানীয় একটি গীর্জায় আয়োজিত গ্রেনফেলের নিহতদের স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর এসব কথা বলেন সাদিক।

লন্ডনের মেয়র বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের পর সরকার ও স্থানীয় কাউন্সিলের কাছ থেকে কম সাড়া পাওয়ার কারণেই কেবল লোকজন ক্ষুব্ধ তা নয় বরং কাউন্সিলের কয়েক বছরের অবহেলাও এ ক্ষোভের কারণ। তারা মনে করে কাউন্সিল ও সরকার তাদের উদ্বেগকে বুঝতে পারে না ও গুরুত্ব দেয় না।’

দেশের সবগুলো টাওয়ার ব্লক পরীক্ষা করে যত দ্রুত সম্ভব সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছেন সাদিক খান।

এদিকে যথাযথভাবে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলা করতে না পারায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ার পর ত্রাণ তৎপরতা জোরালো করতে কয়েকজন কর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে সরকার। কেনসিংটন কাউন্সিল বলেছে, তাদের পক্ষ থেকে সরকারি তদন্তে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দেওয়া হবে।

কাউন্সিলের নেতা নিক প্যাগেট ব্রাউন দাবি করেছেন, অগ্নিকাণ্ডের শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই ঘটনাস্থলে তাদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার থেকে সার্বক্ষণিক কাউন্সিলের কর্মকর্তারা এ ইস্যুতে কাজ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ জুন) রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে পশ্চিম লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। আগুনের তাণ্ডবে ভবনটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনকে নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না ব্রিটিশরা। একে কতৃপক্ষের গাফিলতি হিসেবে দেখছেন তারা। সেখানকার এক কমিউনিটি ব্লগ ওই ভবনের সম্ভাব্য আগুনের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করেছিল দেড় বছর আগে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ থাকা এক বস্তু ভবনটির সংস্কাকজে ব্যবহার করা হয়েছে। লন্ডনবাসী মনে করছে,থেরেসা সরকারের আবাসন মন্ত্রণালয় আগুনের ঝুঁকিজনিত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে । ওই অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। শনিবার তিনি স্বীকার করেছেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তেমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। থেরেসা বলেন,‘যদিও আমাদের জরুরি সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে। কিন্তু ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আক্রান্তদের সহায়তায় যেভাবে এগিয়ে আসা দরকার ছিল, তা করা হয়নি। পর্যাপ্ত সহায়তা তাদের দেওয়া হয়নি।’ অগ্নিকাণ্ডে ঘরহারা মানুষজন এবং স্বেচ্ছাসেবীরা ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এরপরই থেরেসা মে ওই কথা স্বীকার করেন।

/এফইউ/