ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের সাড়া কম

ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বের ভোটে ভোটার উপস্থিতির হার পাঁচ বছর আগের নির্বাচনের তুলনায় ১০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। সরকারি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার (১৮ জুন) বিকেল ৫ টা নাগাদ ৩৫.৩ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন। ২০১২ সালের একই সময়ে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৪৬.৪২ শতাংশ।  

ফ্রান্সের ভোটকেন্দ্র
রবিবার ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম পর্বের ভোটে কোনও দলই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচন। প্রথম দফায় বিজয়ী শীর্ষ দুটি দলের মধ্যে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে রবিবারের (১৮ জুন) এ নির্বাচনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দল নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়,স্থানীয় সময় ভোর ৬টা থেকে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ছোট ও মাঝারি শহরগুলোতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। আর প্যারিসসহ অন্য বড় শহরগুলোতে রাত আটটা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র খোলা থাকবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর পার্লামেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিয়ম একই। ভোট অনুষ্ঠিত হবে দুই দফায়। অর্থাৎ,পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীদেরকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে। কেউ যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোট পেয়ে যান, তবে প্রথম দফার ভোটেই তিনি পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হবেন। আর যেসব আসনে কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট পাবেন না সেসব আসনের শীর্ষ দুই বিজয়ীর মধ্যে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে লড়াই হবে। প্রথম দফার নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর দল এলআরইম এবং মোডেম এ দুটি দল একসঙ্গে ৩২.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। মধ্যম ডানপন্থী রিপাবলিকানরা পেয়েছে ২১.৫ শতাংশ ভোট। ন্যাশনাল ফ্রন্ট ১৩.২ শতাংশ এবং লা ফ্রান্স আনসুমিজ ১১ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

প্রথম পর্বের ভোটে ফ্রান্সের সাবেক ক্ষমতাসীন দল দ্য সোশ্যালিস্ট এবং তাদের জোট মাত্র সাড়ে ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ফ্রান্সের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে একটি দলকে ৫৭৭টি আসনের মধ্যে ২৮৯টি আসন পেতে হয়। জনমত জরিপগুলো আভাস দিয়েছে, নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর দল এলআরইএম ৭৫-৮০ শতাংশ আসনে জয় পাবে। অর্থাৎ পার্লামেন্টে ৪০০টিরও বেশি আসন পাবে তারা। জরিপের আভাস অনুযায়ী, রিপাবলিকানরা পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেলেও ৫৭৭টি আসনের মধ্যে তারা মাত্র ৯০-৯৫টি আসন পাবে।

এর আগে গত মে মাসে আধুনিক ফ্রান্সের কনিষ্ঠতম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্সের রাজনীতিতে বাম ও ডানপন্থী রাজনৈতিক প্রধান দু’টি ধারার বাইরে ১৯৫৮ সালের পর ম্যাক্রোঁই প্রথম ব্যক্তি, যিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। নির্বাচনি প্রচারণায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সুসম্পর্কের মধ্য দিয়েই ফ্রান্সকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন ম্যাক্রোঁ। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসবাদ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ম্যাক্রোঁর সমর্থকদের আশা, পার্লামেন্টে দলটির নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে নিজস্ব নীতিমালাগুলো সহজে পাস করাতে পারবেন ম্যাক্রোঁ।

/এফইউ/