কাতারকে সৌদি আরবসহ চার আরব দেশের ১৩ দফা শর্ত

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বন্ধ করে দেওয়াসহ কাতারের কাছে ১৩ দফা শর্তবিশিষ্ট একটি তালিকা পাঠিয়েছে সম্পর্ক ছিন্নকারী চার আরব দেশ। সেইসঙ্গে বলে দেওয়া হয়েছে, কাতার যদি আরব দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চায় তবে অবশ্যই এ ১৩টি শর্ত পূরণ করতে হবে। ওই শর্তের তালিকার একটি কপি হাতে পাওয়ার দাবি করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি জানিয়েছে।

কাতারের সঙ্গে একমাত্র স্থল সীমান্তটি বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব
সংবাদমাধ্যমটির শুক্রবারের (২৩ জুন) প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন কাতারের কাছে দাবিগুলো পাঠিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ‘যুক্তিসঙ্গত ও কার্যকর’ দাবি-দাওয়া পেশ করার জন্য কাতারের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানোর পর শর্তগুলো পাঠানো হলো। সেখানে কাতারকে দেশটির সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে এবং ১০ দিনের মধ্যে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস ও তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া কাতারকে চার আরব দেশ আরও যে শর্তগুলো দিয়েছে তাহল:

অন্য আরব দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা

চার দেশের মানুষকে নাগরিকত্ব না দেওয়া এবং বর্তমানে তাদের ভূখণ্ডে বসবাসরতদের বহিষ্কার করা। কেননা, এ পদক্ষেপকে চার দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে কাতারের হস্তক্ষেপ বন্ধের প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে।

চার দেশ যাদেরকে সন্ত্রাসী বলে মনে করে তাদেরকে হস্তান্তর করা।

সৌদি আরব ও অন্য দেশগুলোর যেসকল বিরোধী ব্যক্তিকে কাতার তহবিল সরবরাহ করে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করা।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিসিসির সঙ্গে এক কাতারে থাকা।

আল জাজিরার পাশাপাশি আরাবি ২১ এবং মিডল ইস্ট আইসহ অন্য সংবাদ মাধ্যমগুলোতে তহবিল বন্ধ করা।

অনির্দিষ্ট পরিমাণের ক্ষতিপূরণ সরবরাহ করা।

চার আরব দেশের একটির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কাতারকে আইএস, আল-কায়েদা এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলা হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শর্তগুলো মানা না মানার ব্যাপারে কাতারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এর আগে বলেছিলেন, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আলোচনায় যাবেন না।  

গত ৫ জুন জঙ্গিবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। প্রথমে সৌদি আরব ও বাহরাইন সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং পরে তাদের ধারাবাহিকতায় মিসর,সংযুক্ত আরব আমিরাত,লিবিয়া এবং ইয়েমেনসহ আরও কয়েকটি দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়। ইয়েমেনে কথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের আরব জোট থেকেও বাদ দেওয়া হয় কাতারকে।

/এফইউ/