কাশ্মিরে পূণ্যার্থীদের ওপর জঙ্গি হামলা

‘লস্কর-ই তৈয়বার হিন্দু সদস্য’ গ্রেফতার, চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার দাবি

igppressconference7

কাশ্মির হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সন্দেহে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার এক হিন্দু সদস্যকে গ্রেফতারের দাবি করেছে সেখানকার পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাশ্মির অবজারভারের এক প্রতিবেদনে সন্দীপ কুমার নামের ওই জঙ্গিকে আটকের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা মুনির খান দাবি করেছেন, উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা সন্দীপকে গ্রেফতারের পর হামলা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

হামলায় অন্তত ৭ জন তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছে। আহত ১৯ জনের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির ওয়েবসাইটে পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে অমরনাথের তীর্থযাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলার ওই ঘটনায় লস্কর-ই তৈয়বাকে সন্দেহের খবর দেওয়া হয়েছে। কাশ্মির টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সন্দীপ জঙ্গি সংগঠনটির সাবেক কমান্ডার বশির লস্করির সহযোগী ছিলো এবং গত মাসে কাশ্মিরে পুলিশ স্টেশনে হামলায় জড়িত ছিলো। ওই হামলায় ৬ পুলিশ নিহত হয়। সিএনএন-এর নিউজ এইটিন নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করেছে, লস্কর-ই তৈয়বা হিজবুল মুজাহিদীন-এর সঙ্গে যৌথভাবে এই হামলা চালিয়েছে।  

কাশ্মির পুলিশের মহা পরিদর্শক মুনির খানের দাবি, প্রতিশোধ নিতেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে লস্কর জঙ্গিরা। তাকে উদ্ধৃত করে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ‘দিন কয়েক আগেই লস্কর জঙ্গিদের একটি ঘাঁটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া উত্তরপ্রদেশ থেকে সন্দীপ কুমার শর্মাকে গ্রেফতার করার পরও গোয়েন্দাসংস্থার হাতে অনন্তনাগে সন্ত্রাসী হামলা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে।’

মুনির খান বলেন, ‘আমরা সন্দীপ কুমারকে গ্রেফতার করেছি। তিনি জুনে অনন্তনাগ জেলায় থানায় হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলো। বশির লস্করি মারা যাওয়ার পর কুমারও অন্যান্য জঙ্গিদের সঙ্গে ওই একই বাড়িতে আশ্রয় নেয়।  এছাড়া কুমার ব্যাংক লুট ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিলো বলেও দাবি করেন তিনি।  ১৭ জুন আচাবল এলাকায় এক পুলিশ স্টেশনে হামলায় এসএইচও ফিরোজ দার ও পাঁচজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়। এরপর ১ জুলাই এই হামলার মূল হোতা দাবি করে বশির লস্করিকে হত্যা করে পুলিশ।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অনন্তনাগ জেলায় অমরনাথের তীর্থযাত্রীদের উপর জঙ্গিরা হামলা চালায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এবং টাইমস অব ইন্ডিয়া। নিহতরা সবাই গুজরাটের বাসিন্দা। পুলিশ ও সিআরপি সূত্রে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, সোমবার তিন জঙ্গি মোটরবাইকে চেপে বিভিন্ন জায়গায় পরপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। প্রথমে তারা অনন্তনাগের খান্নাবলে বাহিনীর চেকপোস্টের উপরে গুলি চালিয়ে বাতেঙ্গু এলাকার দিকে চলে যায়। সে সময় বাতেঙ্গুতে শ্রীনগর-জম্মু সড়কের উপরে অমরনাথ যাত্রীদের একটি গাড়ি যাচ্ছিল। পুর্ণ্যার্থীদের বাসটি তিনদিক দিয়ে ঘিরে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। দাবি অনুযায়ী অন্ধকারের সুযোগে দ্রুত গা ঢাকা দেয় তারা।  বাতেঙ্গু থেকে পালানোর সময়ে আরওয়ানিতেও বাহিনীর শিবির লক্ষ করে গুলি চালায় জঙ্গিরা।

/এমএইচ/বিএ/