‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের উপস্থিতি রাখাইন পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে’

রোহিঙ্গা নিপীড়ন তদন্তে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশাধিকার দিতে রাজি নন মিয়ানমার। ডি ফ্যাক্টো সরকারের শীর্ষ নেতা অং সান সু চি’র নিরাপত্তা উপদেষ্টা থং তুন দাবি করেছেন, বিশেষজ্ঞদের তদন্ত কেবল সেখানকার উত্তেজনাই বাড়াবে। ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্তকেই পর্যাপ্ত মনে করছে তারা।
noname

মিয়ানমারের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে মে মাসে জাতিসংঘের নিয়োগকৃত তিন বিশেষজ্ঞের জন্য ভিসা মঞ্জুর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে জাতিসংঘে নিয়োজিত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি ওই বিশেষজ্ঞদের প্রবেশের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানান। তবে অং সান সু চির নিরাপত্তা উপদেষ্টা থং তুন কর্মকর্তা এবং কূটনীতিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেছেন, “এ সিদ্ধান্ত থেকে আমরা আমাদেরকে বিচ্যুত রেখেছি। কারণ আমরা বুঝতে পেরেছি এটি গঠনমূলক হবে না।”

সু চি’র উপদেষ্টা আরও বলেন, “ওই প্রস্তাব থেকে মিয়ানমারের দূরে থাকার সিদ্ধান্তের সঙ্গে চীন ও ভারতসহ অন্য দেশগুলোও সামিল হয়েছে, যা তাদের ‘নীতিগত অবস্থান’। আমরা মনে করি জাতিসংঘের মিশন কেবল পরিস্থিতিকে খারাপই করে তুলবে।”

গত বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। রোহিঙ্গা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানোর সময় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্তই যথেষ্ট।

মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু,সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাদেরকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার তো করেই না বরং এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করে থাকে। অক্টোবরের ঘটনার পর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় থেকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী গণহত্যা ও সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ চালিয়েছে, তাদের ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল এবং জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, ওই ঘটনার পর রাখাইন রাজ্য থেকে ৭৫ হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

/এফইউ/বিএ/