নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখলে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটি সরিয়ে নিতে হবে: ইরান

ইরানের ওপর আরোপিত নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করে এর মাসুল গুণতে হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। আঞ্চলিকভাবে স্থাপিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে ইরান থেকে অন্তত ১ হাজার কিলোমিটার দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ইরানের রিভোল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মোহাম্মদ আলি জাফরি। বুধবার (১৯ জুলাই) তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর। তবে পেন্টাগন বলছে, ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ
মঙ্গলবার ইরানের ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানায়, ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর সূত্রে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির ‌‌‘অপতৎপরতা’ সমর্থনকারী ১৮ টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি এ নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।

ইরানের রিভোল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মোহাম্মদ আলি জাফরি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী ও গার্ডের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পথ অবলম্বন করতে চায়, তাহলে দেশটিকে এর আঞ্চলিক ঘাঁটিগুলো ইরান থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে নিয়ে যেতে হবে। যেকোনও ভুলের জন্য তাদেরকে কড়া মাশুল গুনতে হবে।”

মঙ্গলবার মার্কিনপররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, “মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের ক্ষতিকর কর্মকান্ডে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি ক্ষুন্ন  হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
সিরিয়া সরকার এবং হিজবুল্লাহ ও হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলোর প্রতি ইরানের সমর্থনের সমালোচনাও করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।  বলা হয়, “ইরান হিজবুল্লাহ, হামাস, ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের মতো দলগুলোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার নিজ জনগণের ওপর নৃশংসতা চালিয়ে যাওয়ার পরও ইরান আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।”
অন্যদিকে, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদেরকে সমর্থন দিয়েও ইরান সেখানকার যুদ্ধ প্রলম্বিত করছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে।

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে পারমাণবিক চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তেহরানের ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের একদিনের মাথায় নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সহযোগিতার অভিযোগে সে দেশের ১১টি কোম্পানি ও ব্যক্তির ক্ষেত্রে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সম্প্রতি ইরানের এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওবামা প্রশাসন।

/এফইউ/