ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি তাণ্ডবের নিন্দা জাতিসংঘের

nonameশুক্রবার জুমার নামাজের পর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলি বাহিনীর পাশাপাশি ওই হামলায় অংশ নেয় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরাও। এতে নিহত হন তিন ফিলিস্তিনি। আহত হন ছয় শতাধিক মুসল্লি। শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেছেন, এমন হত্যাকাণ্ড খুবই নিন্দনীয়। এমনকি একজন বসতি স্থাপনকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। শিগগিরই এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

বিদ্যমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি যেন আরও উত্তপ্ত হয়ে না উঠে সেজন্য উভয় পক্ষের নেতাদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। কারণ ধর্মীয় স্থাপনা সহিংসতার জায়গা নয়।

জাতিসংঘের উপ মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, জাতিসংঘ মনে করে এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে বৈধ উদ্বেগ রয়েছে। তবে একইসঙ্গে এখানকার স্থিতাবস্থা বজায় রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ।

জেরুজালেমের পবিত্র আকসা মসজিদে ইসরায়েলি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী ও দখলদার বসতি স্থাপনকারীদের গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ২১ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাদের বাধায় যারা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেননি তারা রাজপথেই নামাজ আদায় করেছেন। পথগুলো যেন রূপান্তরিত হয়েছে প্রতিরোধের জায়নামাজে। এক পর্যায়ে মসজিদে প্রবেশ করতে না পারা বিক্ষুব্ধ মুসল্লিদের ওপর গুলি ছোঁড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় মোহাম্মদ মাহমুদ শরাফ নামের ১৮ বছরের এক ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত হন। পূর্ব জেরুজালেম সংলগ্ন রাস আল আমুদ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

noname

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত দ্বিতীয় ব্যক্তি ২০ বছরের মুহাম্মাদ হাসান আবু ঘানাম। নিহত তৃতীয় ব্যক্তি ১৭ বছরের মুহাম্মাদ মাহমুদ খালাফ। তিনি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।

রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলায় জেরুজালেমে ৪৫০ জন এবং পশ্চিম তীরে ২১৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

শুক্রবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ফিলিস্তিনিরা আল আকসা মসজিদ থেকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানান। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ শুরু হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এক ভিডিওতে দেখা গেছে, নামাজরত এক মুসল্লিকে লাথি মারছে ইসরায়েলি পুলিশ। পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল জাজিরা’র সাংবাদিক ইমরান খান বলেন, এটা পরিষ্কার যে, ইসরায়েলি বাহিনী জেরুজালেম শহরের প্রবেশমুখে ফিলিস্তিনিদের দেখতে চায় না। তাদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা।

আল আকসা মসজিদ ঘিরে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মুখে সেনা সদস্যদের ছুটি বাতিল করেছে তেল আবিব। সেনাবাহিনীর প্রতিটি ইউনিটকে যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

৪০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি মুতাহির আবু ইব্রাহিম। তিনি টেলিগ্রাফকে বলেন, মুসলিমদের জন্য এটা খুবই অপমানজনক। এটা মুসলিমদের পবিত্র স্থান। এটি দখলে ইসরায়েলের কোনও অধিকার নেই।’ তখনই তার চারপাশের মুসলিমরা আওয়াজ তুলতে থাকেন। সবাই বলেন, ‘আমরা আমাদের রক্ত দিয়ে হলেও আল-আকসাকে রক্ষা করবো। জেরুজালেমে গিয়ে আমরা শহীদ হবো।’ সূত্র: আল জাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর।

/এমপি/