শরণার্থীবাহী নৌকায় বিমান হামলা সৌদি জোটের!

nonameইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকায় হামলা হামলা চালিয়েছে সৌদি জোট। গত মার্চে সোমালীয় শরণার্থীদের বহনকারী ওই নৌকাটিতে এ হামলা চালানো হয়। এতে নৌযানটিতে থাকা ১৪০ জনেরও বেশি আরোহীর মধ্যে অন্তত ৪২ জন নিহত হন। সোমবার জাতিসংঘে পাঠানো ১৮৫ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির তদন্তকারীরা। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি সশস্ত্র হেলিকপ্টার থেকে শরণার্থীবাহী নৌকাটিতে হামলা চালানো হয়। ওই এলাকায় একমাত্র সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটেরই এ ধরনের হেলিকপ্টার ব্যবহারের সক্ষমতা রয়েছে। ফলে তারা এর দায় এড়াতে পারে না।

একই মাসে ইয়েমেন উপকূলে মাছ ধরার নৌকা লক্ষ্য করে আরও দুটি হামলা চালিয়েছে সৌদি জোট। ওই দুই হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হন।

তদন্তকারীরা বলছেন, শরণার্থীদের বহনকারী নৌকায় এমন হামলা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। একইসঙ্গে এটা ইয়েমেনের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ।

আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি জোট ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরের কাছে এসব হামলার ব্যাপারে তথ্য চেয়েছে জাতিসংঘের তদন্তকারী দল। তবে তাদের দিক থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ইয়েমেনের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে ২০১৫ সালে দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি জোট। গত দুই বছরে সৌদি জোটের উপর্যুপরি বিমান হামলা তথা সামরিক অভিযানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইয়েমেনের বিদ্যমান খাদ্য সংকট চলতি বছরই দুর্ভিক্ষে রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতেই মরার ওপর খড়ার ঘা-এর মতো দেশটিতে নেমে এসেছে কলেরার তাণ্ডব। এপ্রিল থেকে ইয়েমেনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কলেরায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৭১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১ হাজার ৮৫৮ জনের। মানবিক ও ত্রাণ সহায়তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কেয়ার- এর প্রধান উলফগ্যাং জ্যামান ইয়েমেনের মানবিক বিপর্যয়কে ‘মানবতার জন্য চরম লজ্জা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা।

/এমপি/