সেনা প্রত্যাহার না করার পরিণতি হবে মারাত্মক: ভারতকে চীন

চীন-ভারত সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত নাথু লা গিরিপথবিরোধপূর্ণ দোকলাম মালভূমি থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহারে আবারও দাবি তুলেছে চীন। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নিযুক্ত চীনা মিশনের উপপ্রধান লিউ জিনসং বলেছেন, ‘তৃতীয় পক্ষের (ভুটানের) নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জকে ব্যবহার করে ভারতীয় সেনাদের চীনা সীমান্তরেখা অতিক্রম অবৈধ। অনতিবিলম্বে সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় এর পরিণতি হবে মারাত্মক। সামরিক বিকল্প হচ্ছে সার্বভৌমত্বের মৌলিক গ্যারান্টি।’ দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

বেইজিং-এর অভিযোগ, চলতি বছরের জুনের গোড়ার দিকে ভারতীয় বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে চীনা ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। তারা দোকলাম মালভূমি এলাকায় একটি সড়কের নির্মাণকাজে বাধা দেয়। এরপরও চীন যথেষ্ট সংযম দেখিয়ে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেছে। কিন্তু ওই ‘ভুল সংশোধনে’ দিল্লি কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। চীনের অভিযোগ অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে চীনা কূটনীতিক এমন মন্তব্য করলেন। বিদ্যমান চীন-ভারত উত্তেজনায় চীনের কোনও কর্মকর্তার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত এমন ভাষা ব্যবহার এটাই প্রথম।

দিল্লির চীনা মিশনের উপপ্রধান লিউ জিনসং বলেন, চীনের সেনারা দোকলামে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের সংখ্যাও গুণে রেখেছে। সেখানে ৪৮ জন ভারতীয় সেনা রয়েছে। কিন্তু ভারতের একজন সেনাও যদি চীনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে তাহলে সেটা অনেক বড় ঘটনা। আমরা আর একটি ঘণ্টা, আর একটা দিনের জন্যও এটা সহ্য করতে পারি না। তাদের অবশ্যই সরে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতীয় সেনারা যখন অমীমাংসিত এলাকায় প্রবেশ করে সেটা চীনের জন্য খুবই বেদনাদায়ক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু’র এক প্রশ্নের উত্তরে লিউ জিনসং বলেন, ভুটান সরকারের বিবৃতি প্রকৃতপক্ষে দেশটিকে প্রতিনিধিত্ব করে না। এমনকি আমরা যদি চীন ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের বহু প্রক্রিয়া আছে।

এর আগে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল ইউ কিয়ান জানান, বেইজিং দোকলাম মালভূমিকে নিজের সার্বভৌম অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে। চীনের নিজেকে রক্ষার সামর্থ্য সম্পর্কে ভারতের কোনও ভুল ধারণা থাকা উচিত হবে না। ভারতকে মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন, সবকিছু ভাগ্যের ওপর দেবেন না এবং কোনও কল্পলোকে বাস করবেন না। একটি পাহাড়কে নাড়িয়ে দেওয়া সহজ কিন্তু পিপল’স লিবারেশন আর্মিকে নাড়ানো কঠিন। আমরা ভারতের প্রতি আহ্বান জানাই, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে, নিজেদের ভুল শুধরে নিতে, প্ররোচনা বন্ধ করতে এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করতে চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে। সূত্র: দ্য হিন্দু।

/এমপি/