সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা নস্যাতের দাবি ভেনেজুয়েলার

06ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো’কে উৎখাত করতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়েছে সেনাবাহিনীর একাংশ। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমন দাবি করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল সোশ্যালিস্ট পার্টির উপনেতা ডিওসদাদো কাবেলো। এই ‘অভ্যুত্থান চেষ্টা’কে তিনি সন্ত্রাসী হামলা বলেও উল্লেখ করেছেন।

ডিওসদাদো কাবেলো বলেন, সামরিক বাহিনীর ব্যারাকগুলোতে এখন সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় কারাবোবো রাজ্যে এই সেনা অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ফুটেজে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পরিহিত নন; এমন একদল ব্যক্তি নিজেদের ৪১তম ব্রিগেড-এর সদস্য দাবি করছেন।

এদিকে ভেনেজুয়েলার কারাকাসে দেশটির প্রসিকিউটরের অফিস ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধান প্রসিকিউটর  লুইসা অর্তেগা। এ ঘটনাকে তিনি তার নিজের অফিসকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন।

টুইটারে দেওয়া পোস্টে লুইসা অর্তেগা বলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর সদর দফতর অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা আমি প্রত্যাখ্যান করছি।  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগেই আমি এই বিধিবহির্ভূত পদক্ষেপের নিন্দা জানাই।

৫৪৫ সদস্যের আইনসভায় নতুন একটি আইনি সংস্থার বিধান করার একদিনের মাথায় প্রসিকিউটর অফিস নিয়ে এমন অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হলো। প্রধান প্রসিকিউটর লুইসা অর্তেগা বিধানটি স্থগিত করতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের একজন সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে নতুন পার্লামেন্টের অভিষেক স্থগিত করতেও আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রসিকিউটর অফিস। নির্বাচনের সুষ্ঠু হয়েছে কিনা-এর তদন্তে দুইজন বিচারক নিয়োগ  দেওয়া হয়েছে।

প্রায় ১০ লাখ ভোটের অমিলের অভিযোগে নতুন পার্লামেন্টকে অবৈধ বলছে প্রসিকিউটর অফিস। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মাদুরো সরকার।

রবিবার বিতর্কিত ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিরোধীদের অভিযোগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতেই এই বিতর্কিত নির্বাচন করেছেন মাদুরো। এজন্য নির্বাচনেও অংশ নেননি তারা। বরং তাদের ডাকা সরকারবিরোধী গণভোটে অংশ নিয়েছেন ৭০ লাখ মানুষ।

ভেনেজুয়েলার চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। শত শত মানুষ আহত ও আটক হয়েছেন। তবে প্রেসিডেন্ট মাদুরো’র দাবি, আন্দোলনকারীরা মার্কিন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে কোনও মার্কিন  ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মাদুরোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। আর সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার নির্বাচনে রাষ্ট্র কর্তৃক সেনা সদস্যদের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের কারণে তারা নির্বাচনকে স্বীকৃতি না-ও দিতে পারে।

মাদুরোর দাবি, বিপ্লবের জন্য এই ভোটের প্রয়োজন। ‍মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করেন না। তার ভাষায়, ‘সাম্রাজ্যবাদী ট্রাম্প আমার বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি আমাকে কতটা ঘৃণা করেন। কিন্তু আমি বিদেশি সরকারের নির্দেশ কখনও মানিনি এবং ভবিষ্যতেও মানবো না। আমি স্বাধীন দেশের প্রেসিডেন্ট।’ প্রেসিডেন্ট মাদুরো’র দাবি, আন্দোলনকারীরা মার্কিন ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে। সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা।

/এমপি/