ফরাসি পুলিশের নজর এখন সেই বিএমডব্লিউ গাড়িতে

ফ্রান্সের প্যারিসে সেনাক্যাম্পের সামনেই পার্ক করা ছিলো একটি  বিএমডব্লিউ। সেনারা বের হতেই কালো রংয়ের ওই গাড়িটি হামলে পড়ে তাদের ওপর। এরপর উল্টো পথে চালিয়ে দ্রুততার সঙ্গে পালিয়ে যান এর চালক।  এবার সেই কালো বিএমডব্লিউ এবং তার চালককে খুঁজছে পুলিশ। বুধবার সকাল আটটার দিকে ওই হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হন। আহতদের ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফরাসি কর্তৃপক্ষ হামলাটিকে 'পরিকল্পিত' বললেও এটি জঙ্গি হামলা কিনা, তা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

4319702200000578-4773988-image-a-34_1502265979149

প্যারিস পুলিশ সূত্রে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে এক সেনাদলের ওপর ওই হামলা হয়। কর্তৃপক্ষ ওই 'হামলা'কে পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করলেও এটি জঙ্গি হামলা কিনা, সে ব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

লুভালুয়া-পেঘে নামের শহরতলীতে ওই হামলার ঘটনাস্থলের কাছেই এলিসিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছিলো বলে জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে,  হামলার পর পুলিশ ওই গাড়িটির সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে।

স্থানীয় মেয়র প্যাটট্রিক ব্যালকানি বলেন, একটি বিএমডব্লিউ সেনাক্যাম্পের সামনেই পার্ক করা ছিলো। কালো রংয়ের ওই গাড়িটি সেনাদের বের হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলো। এরপর রং সাইডে চালিয়ে এসে হামলা চালায় ওই চালক।

মেয়রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, সেনাদের লক্ষ্য করে যে গাড়িটি হামলা করেছে তাতে কোনও 'সন্দেহ নেই'। ‘‘এটা পরিকল্পিত হামলা, এতে কোনো সন্দেহ নেই' -বিএফএম টিভিকে বলেন মেয়র ব্যালকেনি। প্যারিসের মেয়র দাবি বলেন, লুভালুয়া একটি শান্ত শহর। এখানে এমন ঘটনা হতে পারে কেউ ভাবতেও পারেনি।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গাড়িতে একজনই ছিলো। কাল-দ্য-সাক নামে একজায়গায় গাড়ি পার্ক করে ওই চালক। ওই স্থানে পৌঁছেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয় সিনেটর রজার কারুতচি বলেন, ‘আমাদের আরও সাবধান হতে হবে। এটা কোনও দুর্ঘটনা ছিলো না। ওই ব্যক্তি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমরা উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।’ ২০১৫ সালের পর থেকেই ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা চলছে। দেশজুড়ে ১০ হাজার সেনা টহল দিচ্ছে। এছাড়া ৪ হাজার ৭০০ পুলিশও রয়েছে এই অভিযানে। এর মাঝেই নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলার ঘটনা ঘটলো।

জঙ্গি হামলাকে কারণ দেখিয়ে এ পর্যন্ত ৫ বার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে এতে হামলা বন্ধ হয়নি। তা সত্ত্বেও  ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অন্তত ১ নভেম্বর পর্যন্ত জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়াতে চান ম্যাক্রোঁ।

গত এপ্রিলেও চ্যাম্পস এলিসে এক বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন এক পুলিশ সদস্য। এরপর জুনে একই রাস্তায় এক সামরিক গাড়িতে গ্যাসবোতল ভর্তি গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দিয়েছিলো এক আইএস সমর্থক।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর প্রথম জরুরি অবস্থা জারি করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদ। ওই হামলায় অন্তত ১৩০ জন নিহত হয়েছিলেন। গত বছর নিস শহরে এক ট্রাক হামলায় নিহত হন ৮৬ জন।

/এমএইচ/বিএ/