যাজকদের যৌন নিপীড়ন অস্বাভাবিক বিকৃতি: পোপ

পোপ ফ্রান্সিসক্যাথলিক ধর্মগুরুদের হাতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে যাজকদের অস্বাভাবিক বিকৃতি। এটা চার্চের শিক্ষার বিপরীত। একটা ভয়ঙ্কর পাপ। যেসব যাজক এমন অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘ফাদার, আই ফরগিভ ইউ: অ্যবিউজড বাট নট ব্রোকেন’ শিরোনামে নতুন এক বইয়ের ভূমিকায় এসব কথা বলেছেন পোপ ফ্রান্সিস। বইটি লিখেছেন সুইস নাগরিক ড্যানিয়েল পিটেট। আট বছর বয়সে তিনি প্রথম একজন যাজকের হাতে ধর্ষিত হন।

বুধবার বিল্ড নামের একটি জার্মান দৈনিকে বইটিতে লেখা পোপ ফ্রান্সিসের ওই ভূমিকা প্রকাশিত হয়।

যাজকদের হাতে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার পোপ ফ্রান্সিস। এ ধরনের ঘটনা সহ্য না করার ব্যাপারে তিনি একাধিকবার নিজের প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি করেছেন। তবে তার প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেছেন ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, এ ব্যাপারে ভ্যাটিকানের আরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে।

ভূমিকায় পোপ ফ্রান্সিস লিখেছেন, ঘটনার শিকার শিশুদের এমন ভাগ্যবিড়ম্বনা তার  হৃদয়কে নাড়া দেয়। যেসব যাজক দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের ব্যাপারে আমরা খুবই দৃঢ় পদক্ষেপ নেবো। যেসব বিশপ এবং কার্ডিনাল এদের রক্ষা করেছে; তাদের ব্যাপারেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অতীতেও একাধিকবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির রয়েছে।

কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ দুনিয়ার নানা প্রান্তে বিভিন্ন সময় যাজকদের হাতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ার চার্চগুলোর যাজকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার শিশুকে যৌন নিপীড়নের প্রমাণ মিলেছে। চলতি বছরের গোড়ার দিকে চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত ছয় দশকে শিশুকামী যাজকদের হাতে দেশটিতে প্রায় চার হাজার ৪৪০ জন শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে গঠিত 'রয়্যাল কমিশন'-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৫০ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ক্যাথলিক যাজকরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। আর ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৪ হাজার ৪৪০ জনেরও বেশি ব্যক্তি ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। এসব ঘটনায় এক হাজার ৮৮০ জন যাজক জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে কমিশন। এই যাজকদের মধ্যে ৯০ ভাগই পুরুষ। বাকি ১০ ভাগ নারী।

যৌন নিপীড়নের শিকার একজন জানিয়েছে, সে যাজক শিক্ষকের কাছে ক্লাসরুমেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ওই সময় ক্লাসরুমে থাকা বাকি শিক্ষার্থীদের অন্যদিকে তাকিয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এমপি/