বার্বি ডলে বোমা লুকিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বিমান ভূপাতিত করতে চেয়েছিল জঙ্গিরা!

গত মাসে বার্বি ডল এবং মাংস কিমা করার যন্ত্রে বোমা লুকিয়ে রেখে তা দিয়ে ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিদের একটি চক্র। তবে বিস্ফোরকবাহী ওই লাগেজ ভারী হয়ে যাওয়ায় পরিকল্পনাটি বাতিল করে লেবাননে পাড়ি জমায় লেবানিজ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক আমির খায়াত। সোমবার (২১ আগস্ট) বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলনের লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নোহাদ মাচনোক এমন দাবি করেছেন। এ ঘটনায় আমির খায়াত এবং তার তিন ভাই জড়িত দাবি করে মাচনোক জানান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা এ চার ভাইয়ের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিলেন।

বিমান
গত ৩০ জুলাই সিডনির সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার করা হয় চার সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে। বিমান ভূপাতিতের চেষ্টায় জড়িত দাবি করে এদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তিরা দুটি পরিকল্পনা করেছিল। এর একটি হলো ১৫ জুলাই সিডনি ছাড়ার অপেক্ষায় থাকা ইতিহাদ বিমানের ফ্লাইটে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) স্থাপন করা। আর আরেকটি পরিকল্পনা হলো, ‘গ্যাস বিচ্ছুরণের’ ডিভাইস তৈরি করা। অবশ্য, তারা শেষ পর্যন্ত ডিভাইসটি তৈরি করতে সক্ষম হয়নি। তদন্তকারীরা দাবি করেন, ওই পরিকল্পনাগুলো ভণ্ডুল করে দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাইয়ে সিডনিতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার মধ্যে দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর আটক থাকা দুই ভাই ৪৯ বছর বয়সী খালেদ খায়াত এবং ৩২ বছর বয়সী মাহমুদ খায়াতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

গত জুলাইয়ে সন্ত্রাসনবিরোধী অভিযানে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়
সোমবার লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নোহাদ মাচনুক বলেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ৪০০ আরোহী নিয়ে আবুধাবিগামী বিমানটিতে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসটি বিস্ফোরিত করতে চেয়েছিলেন আমির খায়াত। তবে বিস্ফোরকবাহী লাগেজটির ওজন বেশি হয়ে যাওয়ায় হামলার পরিকল্পনা বাদ দিতে বাধ্য হন। লাগেজটিকে নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য না নিয়ে ওই লাগেজ ছাড়াই লেবাননে পাড়ি জমান তিনি। অস্ট্রেলীয় পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মাইকেল ফেলান আগস্টের শুরুতে জানিয়েছিলেনর লাগেজটিকে নিরাপত্তা পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি। তবে কেন এটিকে নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি তার কারণ সেসময়ঢ জানাতে পারেননি তিনি। তখন তিনি দাবি করেছিলেন,মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর জ্যেষ্ঠ এক নেতা তুরস্ক থেকে বিস্ফোরকগুলোর উপকরণ পাঠিয়েছেন। কার্গো বিমানে করে সেগুলো অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। 

সোমবার মাচনোক জানান, আমিরের আরেক ভাই তারেক খায়াত সিরিয়ার রাক্কায় আইএস এর হয়ে লড়াই করছে। এক বছরেরও বেশি সময় আগে আইএস-এর কমান্ডার হয় তারেক। তখন থেকে লেবাননের ইন্টারনাল সিকিউরিটি ফোর্স তারেক, খালেদ, আমির এবং মাহমুদ খায়াতকে নজরদারিতে রেখেছিল। খালেদ, মাহমুদ এবং আমির তিনজনই অস্ট্রেলিয়ায় থাকতেন এবং মাঝে মাঝে লেবাননে যেতেন বলে জানান মাচনোক।

/এফইউ/