আল-আকসা মসজিদের সুরক্ষা নিশ্চিতে জর্ডানের বাদশাহর সঙ্গে এরদোয়ানের বৈঠক

মুসলমানদের প্রথম কিবলা পবিত্র আল-আকসা মসজিদ নিয়ে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে আলোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। তেহরানভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভির  অনলাইন ভার্সনে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। জর্দানের রাজা ফিলিস্তিনের আল-আকসা মসজিদ দেখভাল করার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
তুরস্কের প্রেসিডেনআট এরদোয়ান এবং জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ

প্রেস টিভির খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়টি আলোচনা করেছেন দুই দেশের শীর্ষ নেতা।  আল-আকসা মসজিদের কাঠামো কিংবা ঐতিহাসিক পরিবেশে কোনও পরিবর্তন ঘটানোর পদক্ষেপ মেনে না নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন তারা।

চলতি আগস্টের ৮ তারিখে ফিলিস্তিন.পিএস নামের স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে মধ্যপ্রাচ্যের পর্যবেক্ষণবিষয়ক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানায়, ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জেরুজালেমের নিজস্ব ও প্রদেয় সম্পত্তি সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরির অভিযোগ উঠেছে। জেরুজালেম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের চেয়ারম্যান হাসান খাতার দাবি করেছেন চুরি হওয়া নথিগুলোর মধ্যে জেরুজালেমের ওল্ড সিটির ৯০ শতাংশেরও বেশি সম্পত্তির ‘বিস্তারিত ও গোপনীয়’ তথ্য ছিল বলেও দাবি করেন। খাতারের আশঙ্কা ইসরায়েলি দখলদাররা জেরুজালেমে তাদের জুডাইজেশন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এ নথিগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। প্রেস টিভির খবর অনুযায়ী আব্দুল্লাহ-এরদোয়ান বৈঠকে দুই নেতা মনে করছেন, এ ধরনের পদক্ষেপে পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসের পরিচিতি হুমকির মুখে পড়বে।

প্রেস টিভির খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে এরদোয়ান ও রাজা আব্দুল্লাহ সহিংসতা অবসানের জন্য ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের মধ্যে নতুন করে কথিত শান্তি আলোচনা শুরুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, ১৯৬৭ সালের সীমানা মেনে এবং পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই কেবল সমস্যার সমাধান সম্ভব।

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণটি একইসঙ্গে মুসলিম ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা একে আল হারাম আল শরিফ নামে ডেকে থাকেন। আর ইহুদিরা এ স্থানটিকে টেম্পল মাউন্ট বলে থাকে। গত ১৪ জুলাই ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের সঙ্গে ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর মসজিদ প্রাঙ্গণটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার পর নতুন করে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়।

১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেত ইহুদিরা। মেনে চলতে হতো অনেক নিয়ম। বিগত ৫০ বছরে এই চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। আর ইসরায়েল এখন আল আকসার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।