হাজিদের উদ্দেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনে সমর্থনের ডাক খামেনির, রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান

সৌদি আরবের মক্কায় সমবেত হাজিদের উদ্দেশে দেওয়া এক বাণীতে বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে সব মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনে নিরঙ্কুশ সমর্থনের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বাণীতে সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, লিবিয়া ও বাহরাইনের গৃহযুদ্ধ এবং পাকিস্তান-আফগানিস্তানের জঙ্গিবাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন তিনি। মিয়ানমারসহ বিশ্বের যে দেশগুলোগুলোতে মুসলিমরা সংখ্যালঘু, তাদের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি

বাণীতে খামেনি মুসলিম বিশ্বের নিরাপত্তাহীনতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বলেন, ‘ এই নিরাপত্তাহীনতা একদিকে নৈতিক অপরদিকে আধ্যাত্মিক। রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতাও মুসলিম বিশ্বকে গ্রাস করে আছে।এর অন্যতম কারণ হলো আমাদের উদাসীনতা এবং শত্রুদের নির্দয় আক্রমণ। আমরা দুর্নীতিবাজ শত্রুদের আক্রমণ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে আমাদের দ্বীনি দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করিনি এবং বিচার-বিবেচনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাইনি।’

ইহুদিবাদকে শত্রু ঘোষণা করে খামেনি তার বাণীতে দাবি করেন, কাফেরদের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হওয়া এবং মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে শত্রুরা মুসলিম বিশ্বের মানচিত্রে আধিপত্য করছে। ‘ ইহুদিবাদী শত্রুরা মুসলিম বিশ্ব-ভূগোলের একেবারে হৃদয়ের মাঝে ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি করেই যাচ্ছে। আর আমরাও ফিলিস্তিনীদের মুক্তির ব্যাপারে আমাদের অবশ্য করণীয় দায়িত্ব পালনে উদাসীন রয়েছি। আমরা সিরিয়ায়, ইরাকে, ইয়েমেনে, লিবিয়ায়, বাহরাইনে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে রয়েছি, আবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা করে যাচ্ছি।’ খামেনি মনে করেন, এসব ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ এবং মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক দায়দায়িত্ব রয়েছে।  

সর্বোচ্চ নেতা তার বাণীতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় ও গোত্রীয় সামগ্রিক নির্যাতন পরিহার করার আহ্বান জানান। পাশপাশি তিনি বলেন ‘সকল মুসলিম দেশ ও জাতিকে শত্রুতার ধরন ও কৌশলগুলোর ব্যাপারে এবং ইহুদিবাদ ও বলদর্পিদের বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারে সচেতন করা। সর্বোপরি নরম ও সশস্ত্র যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য অস্ত্রেশস্ত্রে সুসজ্জিত হওয়া, দ্রুততার সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোতে চলমান বিপর্যকর ঘটনাগুলো বন্ধ করা দরকার’।

ইয়েমেন, ফিলিস্তিন এবং মিয়ানমার  প্রসঙ্গে ইরানের শীর্ষ ক্ষমতাধর এই ব্যক্তি বলেন, ‘ইয়েমেন পরিস্থিতি আজ গোটা বিশ্বের দুঃখ-কষ্ট ও প্রতিবাদের উৎস হয়ে আছে; মিয়ানমার ও অন্যান্য স্থানের মজলুমদের মতো নির্যাতিত সব মুসলিম সংখ্যালঘুর প্রতি দৃঢ় সমর্থন ঘোষণা করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেয়া। এটি এমন এক জাতির প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন ও সহযোগিতা, যে জাতি তাদের দখল হয়ে যাওয়া মাতৃভূমির জন্য প্রায় ৭০ বছর ধরে সংগ্রাম করছে।’