রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ উদ্বিগ্ন: সু চি’কে এরদোয়ান

রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এবং অং সান সু চিমিয়ানমার সরকারের চলমান রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। এ বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি’কে ফোন করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাদের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলায় তুরস্ক এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহ ক্ষুব্ধ ও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এরদোয়ানের বক্তব্যের জবাবে সু চি কী উত্তর দিয়েছেন বা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

ফোনালাপে চলমান সংকট নিরসনের উপায় এবং রোহিঙ্গাদের কাছে তুরস্কের মানবিক সহযোগিতা পৌঁছানোর বিষয়ে কথা বলেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, সহিংসতা নিরসনের প্রচেষ্টায় তুরস্কের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকা আসছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। তার সরাসরি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ওই সফরের আগ মুহূর্তে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের কাছে তুরস্কের বার্তা পৌঁছে দেন এরদোয়ান।

এর আগে সোমবার ইস্তানবুলে এক অনুষ্ঠানে এরদোয়ান বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের চলমান দুর্দশার বিষয়টি জাতিসংঘে তুলে ধরবে তুরস্ক। তিনি বলেন, মিয়ানমারে গণহত্যায় বিশ্ব চুপ রয়েছে। আমি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিয়ষটি উত্থাপন করব। বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।

এরদোয়ান বলেন, তুর্কি রেড ক্রিসেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দুর্দশার শিকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এরদোয়ান। বিষয়টি নিয়ে তিনি বাংলাদেশ, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, আজারবাইজান, পাকিস্তান, ইরান, মৌরিতানিয়া, কাজাক, সেনেগাল ও নাইজেরিয়াসহ অন্তত ২০টি দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

মঙ্গলবার সৌদি আরবের মক্কায় রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক দফতরের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান ইকরাম কিলিস। এ সময় রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন-এর প্রেসিডেন্ট সালিম উল্লাহ আবদুল রাহমান রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নিপীড়নের ব্যাপারে তুরস্ক উদাসীন নয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগ্রহ দেখানোয় আমরা তুরস্ক এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানাই।

৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৬০০ রোহিঙ্গা। 

বাংলাদেশে অবস্থিত সব রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত রাখাইন পরামর্শ কমিশনের পূর্ণ বাস্তবায়ন দেখতে আগ্রহী তুরস্ক। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি।