সাংবাদিক গৌরী হত্যার ঘটনায় বিশেষ তদন্ত দল গঠনের নির্দেশ

ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে হত্যার ঘটনায় একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) কাজ করবে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। এ তদন্ত দলের প্রধান হিসেবে থাকবেন পুলিশের কোনও এক আইজি।  বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্দারামাইয়ার এসব কথা জানান। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এর কাছে তদন্তের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

গৌরী হত্যার প্রতিবাদ
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের এক আইজির নেতৃত্বে বিশেষ একটি তদন্ত দল এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করবে। আমি ডিজিপিকে নির্দেশ দিয়েছে।এ ঘটনার তদন্তে যতসংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তাকে নেওয়া সম্ভব যেন নেওয়া হয় এবং ভালোভাবে এ ঘটনার তদন্ত করে। আপাতদৃষ্টিতে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে।’

ভারতয়ি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ এবং সম্ভাব্য খুনীদের ব্যাপারে কিছু বলছে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই, ভীরুচিত্তের মানুষরাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাতে পারে।’

এরইমধ্যে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে গৌরীর পরিবার। সিবিআই-এর কাছে তদন্ত হস্তান্তর প্রসঙ্গে সিদ্ধারামাইয়া বলেন, ‘হত্যাকারীদের পাকড়াও করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সিবিআই তদন্তের জন্যও আমি রাজি আছি। নিহতের পরিবার যদি এমনটা চায় তবে আমরা সিবিআই এর কাছে তদন্ত হস্তান্তর করব।’

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর)সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর পশ্চিমে অজ্ঞাতপরিচয়ের তিন দুর্বৃত্ত মোটরবাইকে এসে গৌরীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর সব দিনের মতোই মঙ্গলবারও কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ। সে সময় ঘটনাস্থলে ওৎ পেতে রেখেছিল ৩ মোটর সাইকেল আরোহী। গৌরী সদর দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার সময় পরপর ৭ রাউন্ড গুলি বর্ষিত হয়। এরমধ্যে ৩টি গুলি গৌরীর শরীরে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মুত্যু হয়।

চল্লিশ বছর আগে বাবার শুরু করা 'লঙ্কেশ পত্রিকা'র দায়িত্ব নিয়েছিলেন গৌরী। ভাই ইন্দ্রজিৎসহ পত্রিকাটি চালাতেন তিনি। এরমধ্যে নিজস্ব সংবাদপত্র 'গৌরী লঙ্কেশ পত্রিকা'ও রয়েছে। তার পত্রিকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সপক্ষে এবং দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদের বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করা হয়। পরে ভাইয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্য বেশ কিছু প্রকাশনা শুরু করেন গৌরী।

বিভিন্ন ডানপন্থী সংগঠনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সরব গৌরীর মৃত্যুর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সাংবাদিকরা কর্নাটকের যুক্তিবাদী লেখক এম এম কালবুর্গি হত্যার মিল খুঁজে পাচ্ছেন। যদিও এখনও কর্ণাটক পুলিশ এই দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে যোগ থাকার কোনও প্রমাণ হাতে পায়নি বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।