ধর্ষক রাম রহিমের ডেরায় অবৈধ বিস্ফোরক কারখানার সন্ধান

ধর্ষক রাম রহিমের মূল আশ্রম ডেরা সাচ্চা সওদাতে দ্বিতীয় দিনের অভিযানে অবৈধ বিস্ফোরক কারখানার সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী ও জেলা কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ ওই বিস্ফোরক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। বিস্ফোরকের ধরণ বুঝতে কাজ করছে ফরেনসিক দল। রাম রহিমের শিষ্যরা বলছেন, এসব বিস্ফোরক দিয়ে পটকা বানানো হতো।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু ধর্ষক রাম রহিম

শুক্রবার সকালে কড়া নিরাপত্তা ও কারফিউ জারি করে ডেরা আশ্রমে অভিযান শুরু হয়।  আনন্দবাজর পত্রিকা জানিয়েছে, প্রথম দিনের তল্লাশিতে মিলেছিল ১ টাকার নীল, ১০ টাকার কমলা রঙের প্লাস্টিকের কয়েন। মিলেছে ১২০০টা নতুন নোট। বাতিল পাঁচশো-হাজারের ৭০০০টা নোট। পাওয়া গিয়েছে ১৫০০ জোড়া জুতো, ৩ হাজারেরও বেশি ডিজাইনার জামাকাপড়! বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অজস্র ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ। ডেরার সদর দফতরে বহু লাশ পোঁতা রয়েছে বলেও খবর মিলেছে। সে জন্য ইতিমধ্যেই জেসিবি মেশিন এনে মাটি খোঁড়া শুরু করেছে পুলিশ।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, শনিবার ডেরা থেকে বিস্ফোরকের কারখানার সন্ধান মেলে।  ডেরা ক্যাম্পাস থেকে ৮০ কার্টনেরও বেশি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। ভেতরে গোপন সুড়ঙ্গ থাকতে পারে ভেবে নেওয়া হয় মাটি খোঁড়ার যন্ত্র। বোম স্কোয়াড, সোয়াটের ৪০ কমান্ডো, ডগ স্কোয়াডের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী, অ্যাম্বুলেস ও ফায়ার সার্ভিসকেও সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়। সাবেক বিচারপতি একেএস পাওয়ারের নেতৃত্বে চলা এ অভিযানে ৭০ জনের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার খাতিরে এ দিনও তল্লাশির সময়ে জেলায় মোতায়েন রয়েছেন পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। গতকালের মতো এ দিনও ডেরা সদর দফতরের বাইরে রয়েছে ডগ স্কোয়াড। রয়েছে বম্ব স্কোয়াড, দমকল, অ্যাম্বুল্যান্সও।

ডেরা আশ্রমের কাছে বেশ কয়েকটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। সহিংসতার আশঙ্কায় সিরসায় মজুদ রাখা হয়েছে আধাসামরিক বাহিনীর আরও কয়েকশ সদস্যকে।

আধাসামরিক বাহিনীর কয়েকশ সদস্য নিয়ে কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের চালানো এই অভিযানে ৫০জন চিত্রগ্রাহক ও ডজনের ওপর তালা-চাবির কারিগর ছিলেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। “ডেরা ক্যাম্পাস এত বড় যে পুরো অভিযান শেষ করতে সময় লাগবে,” বলেন হরিয়ানার পুলিশপ্রধান বিএস সান্ধু।

রকস্টারদের মধ্যে জীবনযাপন ও জাঁকজমক চলাফেরায় অভ্যস্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিমকে আশ্রমের ভেতরে দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের অপরাধে গত সপ্তাহে  ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৫ অগাস্ট ধর্ষণের দায়ে ডেরাপ্রধানকে দোষী সাব্যস্ত করার পর সিরসা ও পাঁচকুলায় হওয়া সহিংসতায় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়। রাম রহিমের সমর্থকরাই ওই দাঙ্গা সৃষ্টি করেছিল বলে দাবি পুলিশের।