‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে’

nonameজাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ। অথচ তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যায় নিয়ে মুখ খুলতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি এই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানাতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এই সংস্থা। তারা মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে  সহিংসতা বন্ধ করাতে পারেননি। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বুধবার অনুষ্ঠিতব্য নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠককে সামনে রেখে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক এ দুই মানবাধিকার সংস্থা। সুইডেন ও যুক্তরাজ্যের আহ্বানে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত এইচআরডব্লিউর পরিচালক লুইস শারবন্যু বলেন, মিয়ানমারে যেভাবে প্রাণহানি ঘটছে এবং গ্রামের পর গ্রাম জ্বলছে তা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ। এমন একটি বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের কোনও অজুহাত দাঁড় করানোর সুযোগ নেই। সেখানে যে এমনটা ঘটতে যাচ্ছে তা নিরাপত্তা পরিষদের আরও অনেক আগেই দেখা দরকার ছিল।

লুইস শারবন্যু বলেন,২০১৬ সালেও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবে এবার সহিংসতার পরিসর আরও অনেক বড় এবং ভয়াবহ। দৃশ্যত এটি বড় ধরনের একটি জাতিগত নিধনযজ্ঞ।

অ্যামনেস্টির জরুরি সহায়তাবিষয়ক পরিচালক তিরান হাসান বলেন, বার্মিজ কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাশূন্য করতে চায়।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকেও রোহিঙ্গাদের জন্য কোনও সুখবর আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কারণ পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চীন মিয়ানমারকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের পাশে থাকারও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। এমনকি রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ব্যাপারে মিয়ানমারের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো একমত। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আরও আগেই ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দেশটির ২৯টি রাজনৈতিক দল। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের এ ক্ষোভের কথা জানায় বিরোধী দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’সহ অন্য দলগুলো। তাদের ভাষায়, “রাখাইনের প্রশাসনিক অবস্থা এখন বেশ ভালো। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সরকার বিষয়টি খুব ভালোভাবে দেখভাল করছে। তাদের উচিত ‘নাগরিকদের’ পরামর্শ গ্রহণ করা।”সূত্র: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।