রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র

‘এই পরিস্থিতি বর্ণনার ভাষা আমার জানা নেই’

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বিপন্নতার কথা বলতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেড ক্রসের মুখপাত্র কোরিন আম্বলার অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে বলেছেন, সেখানকার অবস্থা ভাষাতীত। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) এবং অন্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে নিয়ে কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি)।
noname

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে গত এক মাসেরও কম সময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪ লাখ মানুষ; যা নজিরবিহীন। এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমাগত মিয়ানমার সংলগ্ন বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার জঙ্গলের আরও গভীরে বিস্তৃত হচ্ছে রোহিঙ্গা বসতি। প্রতিনিয়ত কর্দমাক্ত শরণার্থী শিবিরে আগমন ঘটছে নতুন নতুন মুখের।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর হিসেব মতে, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ২০,০০০ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরগুলোর বিপন্নতা তুলে ধরে ফেডারেশন-এর মুখপাত্র কোরিন এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতি বর্ণনা করার ভাষা আমার জানান নেই। সমস্ত পরিসর জুড়ে কেবলই মানুষের ভোগান্তি। সেখানে বিশুদ্ধ পানির অভাব, আমরা দেখেছি লোকজন অর্থ, খাবার-দাবার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে যা অশোভন। সত্যিকার অর্থে এটি আকস্মিক বিপর্যয়।’

শরণার্থী শিবিরে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রোহিঙ্গারা

এদিকে আইএফআরসি-এর উপ আঞ্চলিক পরিচালক মার্টিন ফলার ত্রাণপ্রার্থীদের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘এ এক বেপরোয়া পরিস্থিতি। যতগুলো মানবসৃষ্ট বড় বড় সংকট রয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। অঞ্চলটিতে দশকের পর দশক ধরে এতো গণহারে যাতায়াতের বড় ঘটনাও এটি। মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংগঠনগুলো অনবরত কাজ করছে, কিন্তু কক্সবাজার এলাকায় সংকট এতো বড় আকার ধারণ করেছে যে লাখো মানুষ অস্থায়ী শিবিরে কিংবা পাশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বসতি তৈরি করে থাকছে। লোকজনের খাবার নেই, পানি নেই, আশ্রয় নেই। সহায়তার জন্য তারা মরিয়া হয়ে আছে। এমন জীবন যেন কাউকে যাপন না করতে হয়।’

কক্সবাজার অঞ্চলে জরুরি সহায়তার জন্য আইএফআরসি যে আবেদন করেছিল তা পাল্টে নতুন আবেদন করেছে সংস্থাটি। বিপন্ন রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন ও পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ১২.৭ মিলিয়ন সুইস ফ্রাংক সহায়তার আবেদন করা হয়েছে।