সু চির বক্তব্যে প্রাধান্য পেয়েছে যেসব বিষয়

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরেই সরব বিশ্ব। তবে যার বক্তব্য সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত ছিল বিশ্ববাসীর কাছে, সেই সু চি ছিলেন প্রায় নীরব। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নীরবতা ভাঙেন মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা। অং সান সু চি দাবি করেন, তার সরকার রাখাইন রাজ্যের সকল রোহিঙ্গাকে রক্ষা করছে। এবার মঙ্গলবার  মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। তার বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

suchi-commitments

 

গত ২৫ আগস্টে রাখাইন রাজ্যে একটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলার পর সামরিক অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। অভিযানে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়ি। এরপর বিষয়টি নিয়ে কথা না বলায় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েন সু চি। তারপর এবারই প্রথম মুখ খুললেন সু চি। 

সু চির বক্তব্যে প্রাধান্য পেয়েছে যেসব বিষয়:

  • আনান কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন সু চি।

  • সীমান্ত সুরক্ষায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় মিয়ানমার। সু চি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই। বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক বাড়াতে চাই।

  • সকল সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন ডি ফ্যাক্টো নেত্রী সু চি।  তিনি বলেন, সব সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের সুরক্ষা দিতে আমরা প্রতিজ্ঞ।

  • অনেক মুসলমানের বাংলাদেশে চলে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন। শরণার্থী হিসেবে যারা বাংলাদেশে গেছে যে কোন সময় তাদের পরিচিতি পর্যবেক্ষণ করে তাদের ফিরিয়ে পুনর্বাসনে নিতে প্রস্তুত মিয়ানমার। 

  • মুসলমানদের সব বসতি নষ্ট হয়নি দাবি করে রাখাইন পরিদর্শনে কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানান সু চি। তিনি জানান, সহিংস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত হবে। 

  • সু চি বলেছেন, কোনোরকম আন্তর্জাতিক চাপাকে ভয় করে না মিয়ানমার। রাখাইনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমন্ত্রণ জানান তিনি।

সু চি'র এ ভাষণ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের মাঝে প্রবল আগ্রহ ছিল। রাখাইন অঞ্চলে সংঘাতের নিরসনের জন্য একটি টেকসই সমাধানের উপর জোর দেন সু চি। কেন এত মুসলিম বাংলাদেশে যাচ্ছে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ সবটাই শুনতে হবে।  রাখাইনে সব পক্ষের নিরাপত্তার পাশাপাশি শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

আরও পড়তে পারেন: 
বক্তব্যে সেনাদের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন সু চি: এইচআরডব্লিউ

এখনও বালুতে মাথা গুঁজে রেখেছেন সু চি: অ্যামনেস্টি 

রোহিঙ্গাদের 'বাঙালি' প্রমাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের