মিয়ানমারের ব্যবহৃত অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন কি?

মিয়ানমারের জাতিগত নিধনযজ্ঞ থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা চার লাখ অতিক্রম করেছে। তবে এই পালিয়ে আসার পথেও তাদের জন্য মরণফাঁদ প্রস্তুত করে রাখে বার্মিজ সেনারা। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তারা স্থাপন করে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন। এসব মাইনের বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে হত্যাযজ্ঞ চালাতে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন ব্যবহৃত হয়।

সুনির্দিষ্ট এলাকায় মাটির নিচে মাইন পুঁতে রাখা হয়। তবে এটি ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন থেকে আলাদা। মানুষের পায়ের চাপ পড়লেই মাটিতে পেতে রাখা এ মাইন বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় হতাহত হন অনেকে। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সহিংসতায় এসব মাইনের আঘাতে অন্তত পাঁচজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু রাখাইনে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার না থাকায় প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিজিবির কক্সবাজারের অধিনায়ক লে: কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান, শুরুতে কয়েকদিন প্রায় রোজই হাঁটুর নিচ থেকে বা পা উড়ে গেছে এমন মানুষ পেয়েছেন তারা। এই আহতদের দেখে বোঝা গেছে যে, স্থল মাইন বিস্ফোরণে তারা আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “এপার থেকে তো আমরা দেখতে পাই না, কিন্তু আহতদের মুখে শুনে বুঝতে পারছি, কাঁটাতারের বেড়ার ২০০ গজ বা ৩০০ গজ এলাকার মধ্যে মিয়ানমারের ভেতরে তারা মাইন বিস্ফোরণে আহত হচ্ছে। এছাড়া তম্রু সীমান্ত, চাকমাকাটা এলাকা এবং নারায়নচর এলাকাগুলো থেকে আমরা এমন অনেক আহত পেয়েছি।”

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন ইতোমধ্যে ‘জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যপুস্তকীয় দৃষ্টান্ত আখ্যা দিয়েছে। মহাসচিব প্রশ্ন তুলেছেন দুই তৃতীয়াংশ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হলে তাকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ ছাড়া আর কী নামে ডাকা হবে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণকে রোহিঙ্গা তাড়ানোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও এনেছে জাতিসংঘ।