'ফুল' কে 'পুল' ভাবার কারণেই মুম্বাই স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনা!

গত ২৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। মুম্বাইয়ের এলফিনস্টোন রোড স্টেশনে ব্রীজ ভেঙে পড়ার গুজবে আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ২৩ জনের। আহত হন ৩০ জনেরও বেশি। ঘটনার তদন্তে তৈরি হয় তিন জনের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল।সেদিনের সেই ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া এক শিক্ষার্থী তদন্তকারীদের দাবি করেছেন, একটা শব্দ শুনতে এদিক ওদিক হওয়ার কারণে সেদিনের সেইদিন পদপিষ্ট হয়ে এতো মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ‘ফুল’ কে ‘পুল’ শোনার কারণেই সেদিনের সেই বিপত্তি বেঁধেছিল।

আতঙ্কে ছুটোছুটির সময় একজনের পড়ে যাওয়া স্যান্ডেল ঝুলছে
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, দুর্ঘটনায় আহত বিশ্বকর্মা নামে ১৯ বছরের এক শিক্ষার্থী ওই তদন্তকারী দলের কাছে নিজের বয়ান জমা দেন। বিশ্বকর্মার বয়ান ও সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, একটি শব্দ শোনা ও বোঝার ভুলেই গুজব রটেছে। আর তার জেরেই ঘটেছে দুর্ঘটনা।

২৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনার আগে কয়েক দিন ধরেই মুম্বাইয়ে টানা বৃষ্টি চলছিল। তার মধ্যেই অনেক যাত্রী স্টেশনে নেমে বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে ফুটব্রিজের উপরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার মধ্যেই চলছিল যাত্রীদের যাতায়াত। আর ফ্রটওভার ব্রিজের ওপর ফুল বিক্রির দৃশ্যও খুব পরিচিত। তদন্তকারীদের বিশ্বকর্মা জানান, বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়েছিল ফুটব্রিজ। এক ফুলওয়ালা কোনওভাবে পা পিছলে সিঁড়িতে পড়ে যান। হাত থেকে ফুল পড়ে যাওয়ায় তিনি ‘ফুল গির গ্যায়া’ (ফুল পড়ে গেল) বলে আর্তনাদ করে উঠেছিলেন। আর সেটা শুনেই অনেকে ভেবে নিয়েছিলেন ‘পুল গির গ্যয়া’, অর্থাৎ ব্রিজ ভেঙে গেছে। আর তার পরেই আতঙ্কে সবাই ছুটোছুটি করে নামার চেষ্টা করতে থাকেন। পড়েও যান অনেকে। তাদের উপর দিয়েই চলতে থাকে আতঙ্কিত মানুষদের পালানোর চেষ্টা।

তবে শুধু গুজবের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মানতে নারাজ যাত্রীদের একাংশ। ওই জীর্ণ ব্রিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন যাত্রীরা। তাদের দাবি, ব্রিজের অবস্থা এতটাই খারাপ যে নীচ দিয়ে ট্রেন গেলে কাঁপতে থাকে সেটি। বৃষ্টিতে পিছলে ব্রিজের সরু সিড়ি বেয়ে ওঠানামা করাও ঝুঁকির। ভিড় সামলানোরও কোনও ব্যবস্থাও নেই ওই ব্রিজটিতে।