বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র না করে এবং ইসরায়েলকে ধ্বংসের জন্য তাদের যুদ্ধ না থামিয়ে ফিলিস্তিনে হামাসের সঙ্গে যে কোনও চুক্তি বা পুনর্মিলনের বিরোধী ইসরায়েল। ফাতাহ ও হামাসের মধ্যকার এ চুক্তি শান্তি অর্জনকে আরও কঠিন করে তুলবে। এটা সমস্যার একটা অংশ, সমাধানের অংশ নয়।
একই রকমের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইসরায়েলের শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা একটি সন্ত্রাসী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ফাতাহ’ও একটি সন্ত্রাসী কর্তৃপক্ষে পরিণত হলো। এখন থেকে ফাতাহ’র মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সহযোগিতার মানে হবে হামাসের সঙ্গে সহযোগিতা। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনা নিয়ে চাপ দেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এ ইস্যুতে কথা বলা।
এর আগে হামাস ও ফাতাহ’র মধ্যকার সমঝোতায় বলা হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রায় এক দশক ধরে হামাস ও ফাতাহ আন্দোলনের মধ্যে যে মতপার্থক্য চলে আসছিল তা নিরসনের জন্যই মিসরের মধ্যস্থতায় কায়রোতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রতিনিধি দলের প্রধান আজম আল-আহমাদ জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী আগামী ১ নভেম্বর থেকে মিসর এবং গাজা উপত্যকার মধ্যকার রাফা ক্রসিং পয়েন্টের পরিচালনার ভার নেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড বাহিনী। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সেখানে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের সব সীমান্তে প্রেসিডেন্ট গার্ড বাহিনী মোতায়েন করা হবে।
গাজা উপত্যকার ফাতাহ আন্দোলনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জাকারিয়া আল-আগা জানিয়েছেন, রামাল্লাহভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক মাসের মধ্যে গাজা সফর করবেন। ২০০৭ সালের পর এটা হবে আব্বাসের প্রথম গাজা সফর। বিগদ দশ বছর ধরে হামাস ও ফাতাহর মধ্যে প্রচণ্ড রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল।
হামাসের তুমুল প্রতিরোধের মুখে ২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারায় পশ্চিমা সমর্থিত রাজনৈতিক দল ফাতাহ। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মিসরের মধ্যস্ততায় ফাতাহ সমর্থিত সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে গাজার ক্ষমতা হস্তান্তরে একটি চুক্তিতে রাজি হয় হামাস। মূলত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও মিসরের অব্যাহত অবরোধ, ফাতাহ সরকারের তৈরি বিদ্যুৎ সংকট এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন না দেওয়ার মুখে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে হামাস। এমন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এ দলটিকে পশ্চিমা সমর্থিত ফাতাহ’র সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হতে বাধ্য করে।