যুক্তরাজ্যের ইসলামি স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের পৃথক ক্লাস বেআইনি ঘোষণা

nonameযুক্তরাজ্যের একটি ইসলামিক স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক ক্লাসরুম ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে দেশটির একটি আপিল আদালত। শুক্রবার লন্ডনের আপিল আদালতে তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন। আদেশে বার্মিংহামের আল হিজরাহ স্কুলের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, স্কুলটিতে পঞ্চম শ্রেণি থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের পৃথক ক্লাসরুমের যে নীতি রয়েছে সেটা বেআইনি। এভাবে লিঙ্গভিত্তিক পৃথকীকরণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতিকর। এটা যুক্তরাজ্যের ২০১০ সালের সমতা আইনের বিপরীত।

ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে একই রকম নীতি অনুসরণ করে এমন অন্য স্কুলগুলোতেও এই রায়ের প্রভাব পড়বে।

এর আগে স্কুলটির নীতির পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্টে। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে আপিল আদালতের শরণাপন্ন হয় যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফস্টেড। শুক্রবারের আদেশে স্যার টেরেন্স ইথারটন, গ্লোস্টার এবং বিটসন সর্বসম্মতিক্রমে অফস্টেডের করা চ্যালেঞ্জের পক্ষে আদেশ দেন।

আপিলে অফস্টেড-এর পক্ষে বিষয়টি নিয়ে আপিল আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন সংস্থাটির প্রধান আমান্ডা স্পিলম্যান। তিনি বলেন, ‘অফস্টেডের কাজ হচ্ছে সব স্কুলে আধুনিক যুক্তরাজ্যে জীবনযাপনের জন্য শিশুদের যথাযথভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে—এ বিষয়টি নিশ্চিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কখনোই লিঙ্গ বা অন্য কোনও কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতি কম সুবিধাজনক আচরণ করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, এই স্কুলটি ছেলেদের ও মেয়েদের সম্পূর্ণ পৃথকভাবে শিক্ষা দিচ্ছে। তাদের হাঁটাচলার করিডোর আলাদা। সব সময়ই তাদের পৃথক রাখা হয়। এটা বৈষম্য এবং ভুল। এটি এই ছেলেমেয়েদের ক্লাসরুম এবং কর্মস্থলের বাইরের জীবনের জন্য অসুবিধাজনক। এই পদ্ধতি আধুনিক ব্রিটেনের জীবনের জন্য তাদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ।

গতবছর স্কুলটি পরিদর্শনের পর অফস্টেড বলেছিল, আল হিজরাহ যথোপযুক্ত নয়। সেখানে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। তারা লিঙ্গের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পৃথক করছে; যা ২০১০ সালের সমতা আইন অনুযায়ী বৈষম্যের মধ্যে পড়ে।

গত নভেম্বরে হাইকোর্টের একজন বিচারক তার রায়ে বলেন, পরিদর্শকরা জনগুরুত্বের দিক থেকে বিবেচনাযোগ্য একটি বিষয়কে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে মূল্যায়ন করেছেন। তবে শুক্রবার আপিল আদালত হাইকোর্টের ওই আদেশ নাকচ করে দেন।

আল হিজরাহ ছাড়াও যুক্তরাজ্যে ইসলামিক, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পরিচালিত প্রায় ২০টি স্কুলে একই ধরনের ব্যবস্থা চালু রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এখন এসব স্কুলের বিষয়েও পর্যালোচনা করা হবে।

আপিল শুনানিতে অংশ নিয়ে আল হিজরাহ’র অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী বোর্ড দাবি করেছে, শুধু ধর্মীয় কারণেই ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথকভাবে ক্লাস করানো হয়। তবে স্কুল তার সব শিক্ষার্থীকেই সমান চোখে দেখে।