‘পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে ইরানও একই পদক্ষেপ নেবে’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি পরমাণু সমঝোতা ছিঁড়ে না ফেলে তাহলে আমরাও সেটি ছিঁড়বো না। আর যদি তারা সমঝোতা ছিঁড়ে ফেলে তাহলে আমরা সেটিকে টুকরো টুকরো করে ফেলবো। বুধবার তেহরানে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইউরোপের দেশগুলো জোরালোভাবে এ পরমাণু সমঝোতার পক্ষে আওয়াজ তুলছে। তারা এ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের ব্ক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে। এমন ভূমিকা প্রশংসাযোগ্য। তবে ট্রাম্পের প্রতি শুধু তাদের আহ্বান বা নিন্দাই যথেষ্ট নয়। চুক্তি বাতিলে হোয়াইট হাউস যে উদ্যোগ নিচ্ছে, ইউরোপকে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। অন্যথায় ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু সমঝোতা বাতিল করলে ইরানও একই পথে হাঁটবে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দায়েশ (আইএস)-এর মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্ম দিয়েছে। আর এ কারণে যারাই জঙ্গিদের মোকাবেলা করছে তাদের ওপরই ক্ষুব্ধ হচ্ছে ওয়াশিংটন। আমরা মার্কিন আধিপত্য দূর করতে সক্ষম হয়েছি। মার্কিন বিদ্বেষী আচরণ সত্ত্বেও আমরা আরও শক্তিশালী হয়েছি এবং উন্নতি সাধন করেছি।

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেন, আমাদের সব উন্নতি ঘটেছে অবরোধের মধ্যে। আমরা লেবানন, সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছি। আপনারা আস্থা রাখুন, এবারও তারা চপেটাঘাত খাবে। ইরানি জাতির কাছে তারা পরাজিত হবে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ‘বাস্তব সম্ভাবনা’ রয়েছে।

ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমি যা করি সে সম্পর্কে শক্তভাবে বিশ্বাস করি। আমি সুবিধা দিতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। সামগ্রিকভাবে ইরানের পরমাণু সমঝোতা বাতিলের বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।’

ওই সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী, প্রতি ৯০ দিন পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিশ্চিত করতে হয় যে, ইরান এ সমঝোতা মেনে চলছে। যদি তিনি বলেন, তেহরান সমঝোতা মানছে না তাহলে মার্কিন কংগ্রেস এ সমঝোতা বাতিল করতে বাধ্য। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প সমঝোতা নিয়ে নেতিবাচক অবস্থান নিলেও তিনি এরইমধ্যে দুইবার ইরান সমঝোতা মানছে বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতার আর স্বীকৃতি দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এটি চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হবে। সূত্র: রয়টার্স।