ইরাকি কুর্দিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

কোসরাত রসূলইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট কোসরাত রসূলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাগদাদের একটি  আদালত তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করে। ইরাকের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিবৃতিতে বলা হয়, কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট কোসরাত রসূল কিরকুকে দায়িত্ব পালনরত ইরাকি পুলিশ বাহিনীকে ‘দখলদার শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের এ বিবৃতি প্রচার করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আদালত মনে করে তার এমন বক্তব্য ইরাকি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে এক ধরনের উস্কানি। এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ২২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

কিরকুক শহরটি কুর্দিস্তানের মধ্যে অবস্থিত না হলেও কুর্দিরা এ শহরটিকে তাদের প্রাণকেন্দ্র বলে মনে করে। বাগদাদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত ২৫ সেপ্টেম্বর কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করে। কিরকুকেও ওই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ ঘটনায় এর আগে কিরকুকের সদ্য সাবেক গভর্নর নাজমিদ্দিন কারিম’কে অপসারণ করে ইরাকি পার্লামেন্ট।

ইতোমধ্যেই কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের সেনাদের কাছ থেকে কিরকুকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইরাকি বাহিনী। আঞ্চলিক সরকার নিয়ন্ত্রিত অফিস-আদাল ও বিমান ঘাঁটির দখল নিয়েছে সরকারি সেনারা। কুর্দি বাহিনীর হাত থেকে কিরকুকের পুনর্দখল করে নিতে এক অভিযান শুরু করার পর প্রায় বিনা বাধায় সরকারি বাহিনী শহরে প্রবেশ করে। অভিযান শুরুর একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ইরাকি সশস্ত্র যানগুলো সরকারি দফতরগুলোর দখল নেয়। এসব দফতরে তারা ইরাকি পতাকা উড্ডয়ন করে। অভিযান শুরুর একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ইরাকি এলিট বাহিনীর সশস্ত্র যানের বহর প্রাদেশিক সরকারের সদর দফরগুলোর দখল নেয়।

তুরস্ক ও ইরানের মতো প্রভাবশালী আঞ্চলিক দেশগুলোর চাপ উপেক্ষা করে কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার প্রশ্নে ওই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯৩ শতাংশ মানুষ ইরাক থেকে কুর্দিস্তানের বিচ্ছিন্নতার পক্ষে রায় দেয়। ওই ফলাফল বাতিলের দাবি জানান ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। তার সরকারের পক্ষ থেকে কুর্দিস্তানের সীমান্ত ও আকাশসীমার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তরের জন্য কেআরজি’র প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে কেআরজি’র প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি বলেছেন, এখনই তারা কুর্দিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে চান না। বরং এই নির্বাচনের ফলাফল হবে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তি।

ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই গণভোট সম্পূর্ণভাবে সংবিধান বিরোধী এবং অবৈধ। তাই গণভোটের ফলাফল কোনও আলোচনার ভিত্তি হতে পারে না। বরং পুরো কুর্দিস্তান অঞ্চলে সংবিধানের অধীনে কেন্দ্রীয় আইন চালু করা হবে।