রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতা আর আতিথ্যে অবাক নন ইয়ান চ্যাপেল

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা আর আতিথ্য দেখিয়েছে তাতে অবাক নন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বিখ্যাত ক্রিকেটার ইয়ান চ্যাপেল। অপরের প্রতি এই দেশের মানুষের আর্তিকে তিনি বুঝে নিয়েছেন ক্রিকেটীয় লেন্সে। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ড-এ এক মতামতভিত্তিক নিবন্ধে ইয়ান নিজেই এসব কথা জানিয়েছেন।

ইয়ান চ্যাপেল

অস্ট্রেলিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের বিশেষ দূত ইয়ান চ্যাপেল। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ যেমন নিজেদের দলকে চূড়ান্ত আনন্দ দিতে চায়। তবে তা করতে গিয়ে বিপরীতের দলের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না। বরং বিদ্বেষ কিংবা উপহাসের বদলে প্রতিপক্ষকে তারা উদার আতিথ্য দিতে চায়। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। দারিদ্র্র্য আর জনসংখ্যার চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় নিশ্চিত করেছে।

চ্যাপেল লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা জনবহুল দেশটির জন্য মোকাবিলা করা কতো কঠিন তা আমি আজ অনুধাবন করতে পারছি। জনসংখ্যার কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশ একটি দরিদ্র, দুর্যোগপ্রবণ ও নিয়মিত বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া দেশ। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ নিজেদের জনসংখ্যা নিয়ে সমস্যার মধ্যে আছে। এ পরিস্থিতিতে আরও বেশি লোকসংখ্যার দেশটিতে প্রবেশ কাম্য নয়।

সাবেক অস্ট্রেলীয় এই ক্রিকেটার লিখেছেন, কিন্তু বাংলাদেশকে যতটুকু চিনেছি তাতে আমি শরণার্থীদের স্বাগত জানানোতে অবাক হইনি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা ছিল ক্রিকেটের মাধ্যমে এবং তা ছিল ইতিবাচক। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের সবচেয়ে উচ্ছ্বাসপূর্ণ মনে হয়েছে আমার কাছে। তারা সব সময় নিজের দল নিয়ে উচ্ছ্বসিত কিন্তু কখনও প্রতিপক্ষের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন না।

উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত ইয়ান চ্যাপেল ক্যারিয়ার ধরে রেখেছেন ১৯৮০ সাল পর্যন্ত। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ছিলেন তিনি।  ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হিসেবে মনে করা হয় তাকে। ২০০৬ সালে এক স্বাক্ষাৎকারে বিখ্যাত লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন বলেছেন, চ্যাপেল তার খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও স্পিনার ৭৫ টেস্টে করেছেন ৫৩৪৫ রান এবং ১৬ ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে করেছেন ৬৭৩ রান।