যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন টিউলিপ ও রূপা হক

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও রূপা হক দেশটির পার্লামেন্টে নারীদের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। টিউলিপ জানিয়েছেন, রাজনীতিবিদদের নিয়ে যৌন কেলেংকারির ইস্যুটি আরও বড় হতে পারে। আর রূপা হক জানিয়েছেন, ২০ বছর বয়সে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন।

টিউলিপ সিদ্দিক ও রূপা হক

এক বিবৃতিতে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আর এখন আমাদের গল্পে সীমাবদ্ধ নেই। আমি অনেকের কাছে থেকেই শুনেছি হয় তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন কিংবা এমপি হওয়ার কারণে তাদেরকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।’

টিউলিপ বিষয়টি হাউস অব কমন্সের নেতা অ্যান্দ্রিয়া লিডসমের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং এ বিষয়ে নীরবতার সংস্কৃতি ভাঙার আহ্বান জানিয়েছেন।

লেবার পার্টির এই এমপি বলেন, ‘আমাকে হয়তো দশজন মানুষ এমন কথা শুনিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টা তদন্ত করা হলে এরকম শত শত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এটি খুব মারাত্মক বিষয়।’

টিউলিপ জানান, সরকারি কর্মকর্তারা অনেকেই বিষয়টি চেপে যান। তারা মনে করেন, এতে করে তাদের রাজনৈতিক জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘কাজের সুস্থ পরিবেশ সবার অধিকার। এটা কোনও বাড়তি সুবিধা না। এটা নিশ্চিত করতে সরকারকে ভূমিকা নিতে হবে।’

লেবার পার্টির আরেকটি এমপি রূপা হকও প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো একজন পুরুষ সদস্যের যৌন হয়রানির শিকার হন। ১৯৯৫ সালের সেসময় তার বয়স ছিলো ২০ বছর।’

রূপা বলেন, ‘ঘটনাটি আমি মেনে নিতে পারিনি। কিন্তু তার ক্ষমতার কারণে আমি কিছু বলতে পারিনি। আমি খু্বই অবাক হয়েছিলাম। আমি ভাবতেও পারিনি তিনি এমনটা করবেন।’

রূপা আরও বলেন, হাতটি যখন আমার দিকে এগিয়ে আসছিল তখন আমি হতবাক হয়েছিলাম। হুট করেই তা ঘটে। সত্যিকার অর্থে শুধু আমার ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটায় আমি খুব অবাক হয়েছিলাম।

সহকর্মী ব্রিটিশ এমপিদের নিজেদের রক্ষা এবং পার্লামেন্টে যৌন হয়রানির বিষয়ে তিনি কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন শক্তিশালী, স্বাধীন তদন্ত কমিটি ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এই কমিটির সদস্যদের যৌন হয়রানি বন্ধে প্রশিক্ষিত হতে হবে।

রূপা আরও বলেন, ‘যৌন হয়রানি বন্ধে প্রশিক্ষিত ও দক্ষদের নিয়ে একটি স্বচ্ছ ও স্বাধীন দল গঠন করতে হবে।’

গত কয়েকদিনে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদদের মাঝে এই যৌন হয়রানির বিষয়টা বার বার আলোচনায় আসছে। বিষয়টি নিয়ে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আহ্বান জানিয়েছেন। ইস্যুটি থেরেসা মের নেতৃত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।