ভূমধ্যসাগর থেকে ২৬ কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার

nonameভূমধ্যসাগরের ইতালীয় উপকূল থেকে রবিবার ২৬ কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের সবার বয়স ১৪-১৮ বছরের মধ্যে। চলতি সপ্তাহে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে মাঝ দরিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়। স্প্যানিশ একটি জাহাজ প্রথমে সাগরে তাদের মরদেহ দেখতে পায়। এই কিশোরীরা সবাই নাইজেরিয়ার নাগরিক। ইতালির স্যালারনো শহরের পুলিশ প্রধান লোরেনা সিকোতি তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এই ঘটনায় এক নবজাতকসহ ৯০ জন নারী এবং ৫২ জন পুরুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ভূমধ্যসাগরে শরণার্থীবাহী জাহাজডুবির ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু এবারের ঘটনায় নিহত ২৬ জনের সবাই কিশোরী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কর্তৃপক্ষের ধারণা, ওই কিশোরীরা যৌন-পাচারকারীদের নৌকায় ছিল। সেখানে তারা কোনও কারণে পাচারকারীদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে কিনা; তা তদন্ত করছেন ইতালির কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে। কিশোরীদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হবে।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, নিহত কিশোরীদের পাশেই দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে ঝুলে ছিলেন উদ্ধার হওয়া বাকি ব্যক্তিরা।

জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত স্বপ্নভূমির উদ্দেশে দেশ ছাড়ছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাহাজ বা নৌকায় চড়ে বসছেন অসংখ্য শরণার্থী। আর উত্তাল সাগরের বুকে একের পর নৌকাডুবিতে প্রাণ যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন রবিবারের এ দুর্ঘটনা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুনিয়াজুড়ে জীবন বাঁচাতে আর মাথা গোঁজার জন্য নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর নানা দিকে ছোটাছুটির ঘটনা এর আগে আর ঘটেনি। ২০১৪ সালে যুদ্ধ-দাঙ্গাপীড়িত বা অভাবের তাড়নায় প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ নিজের জন্মভূমি আর ঘরবসত ছেড়ে নানা দেশে পাড়ি দিয়েছিল। সেই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে তুরস্কের উপকূলে সন্ধান মেলে আয়লান নামের এক সিরীয় শিশুর মৃতদেহ। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে নিথর পড়ে থাকা শিশু আয়লান কুর্দির নাম শুনলে এখনও স্তব্ধ হয়ে যান অনেকে। ছোট নৌকায় থাকা আয়লান ও তার ভাই ভেসে যায় তুরস্কের সৈকতে। তাদের মা ভেসে যান দূরের অন্য এক সৈকতে। এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সপরিবারে সাগরে ভাসছেন হাজারো আয়লান কুর্দি। এই শরণার্থীদের সলিল সমাধি যেন থামছেই না।