ক্ষমতা সুসংহত করতেই সৌদি আরবে ধরপাকড়: এইচআরডব্লিউ

মোহাম্মদ বিন সালমানসৌদি আরবে রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করে দুর্নীতি বিরোধী একটি সংস্থা গঠন করা হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে একদল প্রিন্স, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, পদস্থ কর্মকর্তা এবং খ্যাতনামা ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। ক্ষমতা সুসংহত করতেই তাদের বিরুদ্ধে এমন ধরপাকড় চালানো হচ্ছে। এ ঘটনা দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনটাই মনে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক সারা লিন উইটসন বুধবার নিউ ইয়র্কে এইচআরডব্লিউ-এর এ মূল্যায়ন তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সৌদি সরকারকে অবিলম্বে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নেওয়া আইনগত ব্যবস্থা প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে। তারা যাতে সব রকম আইনি সহায়তা পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

সারা লিন উইটসন বলেন, তারা সত্যি সত্যি দুর্নীতি করে থাকলেও তদন্ত ও গ্রেফতার বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে হওয়া উচিত। সৌদি সংবাদমাধ্যমে বিষয়টিকে যেভাবে যুবরাজের দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে প্রচার করছে; তাতে দৃশ্যত এই গণগ্রেফতারকে রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার খেলা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

সম্প্রতি সৌদি রাজা সালমান নিজের ছেলে যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানকে দুর্নীতি দমন কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।

৪ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার রাতে সৌদি আরবের ১১ জন প্রিন্স, চারজন বর্তমান মন্ত্রী এবং ১০ জন সাবেক মন্ত্রীকে আটক করা হয়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সদ্য গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়। এরইমধ্যে দুই প্রিন্স নিহত হওয়ার খবর আসে। ব্যাপক রদবদল করা হয় মন্ত্রিসভায়। সবগুলো ঘটনায় উঠে আসছে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম। যুবরাজের দাবি, তিনি দেশে সংস্কার করতে চান। তবে সমালোচকরা বলছেন, তিনি আসলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান। নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েমের পথে যাদেরই অন্তরায় বলে মনে করছেন; তাদেরই তিনি সরিয়ে দিচ্ছেন।

যুবরাজের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনকে যে কাউকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এ কমিশন যে কোনও সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। এরইমধ্যে রাজপরিবারের কিছু সদস্যের নামের একটি তালিকা বিমানবন্দরগুলোতে পাঠানো হয়েছে। তারা যেন কোনও অবস্থাতেই দেশত্যাগের সুযোগ না পান সে বিষয়ে এতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এরইমধ্যে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে এরইমধ্যে ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১২ হাজারেরও বেশি অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সাবেক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তার পরিবারের সদস্যরা।