কাতারের মতো নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় লেবানন

লেবাননের রাজনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা মনে করে সৌদি আরব তাদের ওপরও কাতারের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। তবে কাতারের মতো এই অবরোধ কাটিয়ে ওঠার মতো সক্ষমতা তাদের নেই। মঙ্গলবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা যায়।

download





প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪ লাখ লেবানিজ কাজ করেন। এখানে থেকেই বছরে ৭-৮০০ কেটি ডলার আয় হয় দেশটির। ঋণগ্রস্ত সরকারে আয়ের বড় উৎস তাই শ্রমসম্পদ।
লেবাননের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রতিকূল অবস্থায় থাকা লেবাননের জন্য এটা বড় হুমকি। তারা যদি এই বৈদেশিক মুদ্রা আসার পথ বন্ধ করে দেয় তবে বড় বিপদে পড়বে লেবানন।’
গত ৫ জুন কাতারের ওপর সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ এনে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরসহ কয়েকটি দেশ। এই দাবি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে কাতার।
৪ নভেম্বর সৌদি সফরে থাকাকালীন সময়েই হঠাৎ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। আকস্মিক এই ঘটনায় রাজনৈতিক সংকটে পরে লেবানন।
রবিবার হারিরি নিজেই সৌদি নিষেধাজ্ঞার আভাস দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে না পড়তে চাইলে সৌদি আরবের দেওয়া শর্তও উল্লেখ করেন তিনি। লেবাননে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হিজবুল্লাহকে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বলা হয়। বিশেষ করে ইয়েমেনে।
সৌদি আরবের এই পদক্ষেপের সঙ্গে পরিচিত এক কর্মকর্তা বলেন, হারিরি বক্তব্যের আভাস মিলেছে যে সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি মেনে না নিলে আমাদের বিপক্ষে কি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। আর কাতারের উদাহরণ তো সামনেই আছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে লেবানন নিয়ে সৌদি নীতির পরিবর্ত এসেছে। মূলত তিনিই এখন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।

হারিরি পদত্যাগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করতে সৌদি আরব ও ইরানের ছায়াযুদ্ধের বিষয়টিই আবার সামনে চলে আসে।  ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই দেশটিকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পরিসরে শক্ত প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। সুন্নি মুসলিমপন্থী সৌদি আরবের আশঙ্কা, শিয়াপন্থী ইরান তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। ইরাকযুদ্ধ ও আরব বসন্তের সুযোগ নিয়ে বাড়াতে পারে অঞ্চলগত প্রভাব। বাগদাদ, দামেস্ক, সানা ও বৈরুতের ধারাবাহিকতায় তেহরান মধ্যপ্রাচ্যের বাদবাকি দেশগুলোকে নিজেদের কব্জায় নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে সৌদি আরবের। এই বাস্তবতায় মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার লড়াইয়ে নেমেছে তারা।