সৌদি আরব হারিরি’কে আটকে রেখেছে, এটা আগ্রাসন: লেবানিজ প্রেসিডেন্ট

মাইকেল আউনলেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল হারিরি’কে আটকে রেখেছে সৌদি আরব। এটা স্পষ্টতই লেবাননের বিরুদ্ধে আগ্রাসন। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন। এর আগে হারিরি’র জন্য আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিলেও প্রকাশ্যে তার এমন বক্তব্য এটাই প্রথম।

মাইকেল আউন বলেন, ১২ দিনেও হারিরি নিজ দেশে ফিরতে পারেননি। এটাকে ন্যায্যতা দেওয়ার কিছু নেই। ফলে আমরা তাকে আটক হিসেবেই বিবেচনা করছি। এটা ভিয়েনা চুক্তি এবং মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।

লেবানিজ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা দীর্ঘ অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করতে পারি না। একটা দেশের কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে না।

এর আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে কথা বলেন মাইকেল আউন। তিনি বলেন, সৌদি আরবকে পরিষ্কার করতে হবে- গত সপ্তাহে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পরও কেন হারিরি দেশে ফেরেননি। দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন বাজে অবস্থানের মধ্যে থাকবেন- লেবানন তা মানতে পারে না।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি আরব হারিরি’র সঙ্গে যা করেছে সেটা আন্তর্জাতিক চুক্তি ও প্রচলিত নিয়মের লঙ্ঘন।

আকস্মিক সৌদি সফরে গিয়ে গত ৪ নভেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাদ হারিরি। পদত্যাগের কারণ হিসেবে ইরান সমর্থিত দল শিয়াপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন তিনি। হারিরি বলেছিলেন, খুন হওয়ার ভয়েই তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সৌদি আরবের চাপেই পদত্যাগ করেছেন তাদের মিত্র হারিরি। হিজবুল্লাহ’র মুখোমুখি হতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে ‘সরিয়ে দিয়েছে’ সৌদি কর্তৃপক্ষ।

২ নভেম্বর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন অভিযানের নামে ১১জন প্রিন্সসহ প্রায় ২০০ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময়ই পদত্যাগের ঘোষণা দেন হারিরি। বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে অভ্যন্তরীণ কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান, অন্যদিকে আঞ্চলিক আধিপত্য জোরদারে লেবানন ও ইয়েমেনকে ইরানবিরোধী ছায়াযুদ্ধের নাট্যমঞ্চ বানায় সৌদি আরব।

লেবানেনের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন বলেছেন, হারিরি দেশে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র দেওয়া না পর্যন্ত তিনি তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। কারণ তিনি যে পরিস্থিতিতে রয়েছেন; ওই অবস্থায় দেওয়া বক্তব্য সরকার গ্রহণ করতে পারে না।