কুর্দিদের আগের সীমান্তে ফিরে যেতে হবে: এবাদি

Haider al Abadiকুর্দিস্তান সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে কুর্দি বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। তিনি বলেন, আমরা পিছু হটবো না, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে উপস্থিত রয়েছে। আমি কুর্দি কর্মকর্তাদেরকে তাদের আগের বিবৃতিগুলোর প্রতি অনুগত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের ২০০৩ সালের আগের সীমান্তে ফিরে যেতে হবে। ফেডারেল কর্তৃপক্ষের হাতে এসব সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হবে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তেল বিক্রিসহ বিমানবন্দর এবং সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনও ইস্যুতে বাগদাদের সঙ্গে 'সমন্বয় এবং সহযোগিতা' বাড়ানোর জন্য কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার (কেআরজি)-এর কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান আবাদি।

তিনি আমি এখনই বলছি না যে, আমাদের ধৈর্যের মাত্রা ফুরিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা চিরদিন অপেক্ষা করব না। সীমান্ত থেকে সরে না গেলে যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইরাকের উত্তর অংশে অবস্থিত কুর্দিস্তানকে আধা-স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশটির সংবিধান। আরবিল, সুলাইমানিয়া এবং দোহুক অঞ্চল নিয়ে কুর্দিস্তান গঠিত হয়েছে। তবে ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সামরিক অভিযানের সুযোগে কুর্দিরা তাদের সীমান্তের পরিধি বাড়ায় এবং কিরকুকের মতো কিছু এলাকা কুর্দিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। তবে এ বছর কুর্দিস্তানের গণভোট নিয়ে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে গত মাসে ওই গণভোটের ফলাফল স্থগিতের ঘোষণা দেয় কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার (কেআরজি)। একইসঙ্গে তারা বাগদাদের সঙ্গে সংলাপ শুরুরও প্রস্তাব দিয়েছে।

কেআরজি’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, অব্যাহত লড়াইয়ে কেউই বিজয়ী হবে না, বরং কিন্তু এটি দেশকে বিশৃঙ্খলার পথে ধাবিত করবে। ১৬ অক্টোবর থেকে পেশমার্গা যোদ্ধাদের সঙ্গে ইরাকি বাহিনীর যে সংঘাত শুরু হয়েছে তাতে এরইমধ্যে উভয়পক্ষ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। এটা দীর্ঘমেয়াদে ধারাবাহিক রক্তপাতের সূচনা করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাত বন্ধে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

ইতোমধ্যেই কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের সেনাদের কাছ থেকে কিরকুকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইরাকি বাহিনী। আঞ্চলিক সরকার নিয়ন্ত্রিত অফিস-আদাল ও বিমান ঘাঁটির দখল নিয়েছে সরকারি সেনারা। কুর্দি বাহিনীর হাত থেকে কিরকুকের পুনর্দখল করে নিতে এক অভিযান শুরু করার পর প্রায় বিনা বাধায় সরকারি বাহিনী শহরে প্রবেশ করে। অভিযান শুরুর একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ইরাকি সশস্ত্র যানগুলো সরকারি দফতরগুলোর দখল নেয়। এসব দফতরে তারা ইরাকি পতাকা উড্ডয়ন করে। অভিযান শুরুর একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে ইরাকি এলিট বাহিনীর সশস্ত্র যানের বহর প্রাদেশিক সরকারের সদর দফরগুলোর দখল নেয়।

তুরস্ক ও ইরানের মতো প্রভাবশালী আঞ্চলিক দেশগুলোর চাপ উপেক্ষা করে কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার প্রশ্নে ওই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯৩ শতাংশ মানুষ ইরাক থেকে কুর্দিস্তানের বিচ্ছিন্নতার পক্ষে রায় দেয়।