ইরানের বিরুদ্ধেই চাপানো হলো অস্থিতিশীলতা তৈরির দায়

 

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার কথা বলে আবারও ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। রবিবার মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জোটের নেতারা ইরানে বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অঙ্গীকার করেন। সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

AA719F4C-9C74-4F2C-8BED-F14A29FDDFFC_cx0_cy1_cw0_w1023_r1_s

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেন থেকে সৌদি রাজধানী রিয়াদ লক্ষ্য করে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য আবারও ইরানকে দায়ী করে সৌদি সরকার। দেশটির পররাষ্ট্র মনস্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য কোনও রকম ছাড় দেবো না। আমরা সবাই একসঙ্গে থাকবো।’

গত দুই সপ্তাহ ধরে সুন্নিপন্থী সৌদি আরব ও শিয়াপন্থী ইরানের মধ্যে চলছে ছায়াযুদ্ধ। আধিপত্য বিস্তারের খেলায় মেতেছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের আশঙ্কা, ইরান তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। ইরাকযুদ্ধ ও আরব বসন্তের সুযোগ নিয়ে বাড়াতে পারে আঞ্চলিক প্রভাব। বাগদাদ, দামেস্ক, সানা ও বৈরুতের ধারাবাহিকতায় তেহরান মধ্যপ্রাচ্যের বাদবাকি দেশগুলোকে নিজেদের কব্জায় নিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে সৌদি আরবের। এই বাস্তবতায় মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার লড়াইয়ে নেমেছে তারা। দেশের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ের নামে আর ইরানঘনিষ্ঠ  ইয়েমেন-লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগ তুলে তেহরানবিরোধী ছায়াযুদ্ধ শুরু করে সৌদি আরব।

এরই অংশ হিসেবে ৪ নভেম্বর পদত্যাগ করেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। সৌদি এ মিত্র দাবি করেন, ইরান ও হিজবুল্লাহর কারণেই পদত্যাগ করছেন তিনি। সশস্ত্র রাজনৈতিক দল হিজবুল্লাহ লেবানন সরকারের অংশ। দেশটিতে তারাই রাজনৈতিকভাবে বেশি শক্তিশালী। দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনও হিজবুল্লাহর সমর্থক।

মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি বৈঠক ডাকে সৌদি আরব। কায়রোতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে হিজুবল্লাহর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়। সৌদি জোটের দাবি, আরব দেশগুলোতে সন্ত্রাস ও অস্থিরতা ছড়াচ্ছে হিজবুল্লাহ। ইয়েমেনে বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছেও বিষয়টি তুলবে।

তবে লেবাননের প্রতিনিধি হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলার বিরোধীতা করেছেন। তিনি জানান হিজবুল্লাহ তাদের সরকারের অংশ।

এদিকে এক ‍টুইটবার্তায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার গার্গাস বলেন, ‘এই বৈঠকে একটা বার্তাই দেওয়া হয়েছে আর তা হচ্ছে সবাই ইরানের বিপক্ষে।’ আরব লিগের সচিব আহমেদ আবুল গেইত বলেন, ‘ইরানি হুমকি সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলছে।’

রবিবার মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনও।