রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণকে 'বর্ণবাদ' আখ্যা অ্যামনেস্টির

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের আচরণকে ‘অমানবিক বর্ণবাদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও আইনি স্বীকৃতি পুনর্বহাল এবং দেশের বৈষম্যমূলক নাগরিক আইন সংশোধন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।  

মিয়ানমার থেকে পলায়নরত রোহিঙ্গারা
দুই বছরের গবেষণার ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) অ্যামনেস্টি প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে এসব কথা  বলা  হয়। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে দুই বছরের গবেষণার বিস্তারিত তুলে ধরেন অ্যামনেস্টির কর্মকর্তারা।

১০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এক বছর ধরে ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়’ পরিচালিত অভিযানে রোহিঙ্গাদের জীবন-যাপনের ওপর চারপাশ থেকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।

সংগঠনের গবেষণা পরিচালক অ্যানা নেইস্ট্যাট বলেন, মিয়ানমার সরকারের বর্ণবাদী আচরণে রাখাইনে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইনে যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তা স্পষ্ট। রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন তিন মাস আগে নয়, এ সংকট শুরু হয়েছে বহু আগেই’।

সেসময় জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের অধিকার পুনর্বহাল, আইনি স্বীকৃতি প্রদান এবং বৈষম্যমূলক নাগরিক আইন সংশোধন করতে মিয়ানমার সরকারকে তাগিদ দেন তিনি।

এর আগে গত অক্টোবরেও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল অ্যামনেস্টি। ৪৭ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শত শত শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রাখাইন থেকে তাদের উৎখাত করতে ধারাবাহিকভাবে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড,নৃশংস ধর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর সুনির্দিষ্ট ইউনিটের বিরুদ্ধে এমন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তুলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির আশঙ্কা,এসব অপরাধ রোহিঙ্গাদের উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ারও আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা। তার আগেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একই রকমের সুপারিশ করেছিল অ্যামনেস্টি।