রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে সু চিকে সরব হতে বললেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এবং এর নিন্দা জানাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বক্তব্য দেওয়ার সময় এ আহ্বান জানান তিনি। সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মঙ্গলবার ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টির দেওয়া নতুন প্রতিবেদনটিকেও স্বাগত জানান বরিস।


বরিস ও সু চি (ফাইল ফটো)
মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে প্রশ্ন পর্ব চলার সময় ব্রিটিশ এমপিদেরকে বরিস বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তিনি মিয়ানমারের নেত্রীর সঙ্গে তিনবার দেখা করেছেন। সেইসময় সু চিকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বলে দাবি করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বরিস বলেন, ‘অং সান সু চি একজন মহা ন্যায়পরায়ণ নেতা। গণতন্ত্রের জন্য তিনি যে লড়াই করেছেন তার জন্য আমরা এখনও তাকে স্যালুট জানাই। তবে এটি এখন রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং নিন্দা করা অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, পালিয়ে আসা ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদেরকে নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে।

এর আগে মঙ্গলবার ‘কেজড উইদাউট রুফ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাধীন কাঠামোগত বৈষম্য ব্যবস্থার ফাঁদে আটকা পড়েছে। একে মিয়ানমার সরকারের ‘বর্ণবাদ’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।

দুই বছরের গবেষণার ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে দুই বছরের গবেষণার বিস্তারিত তুলে ধরেন অ্যামনেস্টির কর্মকর্তারা। সংগঠনের গবেষণা পরিচালক অ্যানা নেইস্ট্যাট বলেন, মিয়ানমার সরকারের বর্ণবাদী আচরণে রাখাইনে রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ ও শিশুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন,‘রাখাইনে যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তা স্পষ্ট। রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন তিন মাস আগে নয়, এ সংকট শুরু হয়েছে বহু আগেই’।