‘আইএস সিরীয়দের শিরশ্ছেদ করার সময় কোথায় ছিল আরব লিগ?’

মধ্যপ্রাচ্যে আরব লিগের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক এ সংস্থাটি এখন ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। ইয়েমেনিরা এই আগ্রাসনের জবাবে রিয়াদে মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। আরব লিগ তাদের এই প্রতিরোধের নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু জঙ্গিগোষ্ঠী দায়েশ (আইএস) যখন সিরীয়দের শিরশ্ছেদ করেছিল তখন আরব লিগ তখন কোথায় ছিল? ইয়েমেনের জনগণের ওপর সৌদি বোমা হামলার সময় তারা কোথায় ছিল? কিন্তু এখন তারা এক হয়েছে। মঙ্গলবার ইরানি প্রেসিডেন্টের দাফতরিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

হাসান রুহানি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে পতিত, দুর্বল ও অকার্যকর আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শুধু একটি বিষয় নিয়ে একত্রিত হয়েছে। তারা এই কারণে এক হয়েছে যে, সৌদি আরবের বোমা হামলার জবাবে ইয়েমেনের জনগণ কেন রিয়াদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। অথচ সৌদি আরব ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটন করছে। প্রতিনিয়ত তাদের ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরে আটকে থাকা ওষুধ ও খাবারের দু্টি চালান জরুরিভিত্তিতে সরবরাহের অনুমতি দিতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো। নাহলে অবরোধের কারণে প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে।

ইয়েমেনে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমন্বয়ক জেমি ম্যাকগোল্ডরিক বলেন, ‘অবস্থা এখন খু্বই খারাপ। ত্রাণের দুটি চালানের মধ্যে একটিতে কলেরার ওষুধ, অন্যটিতে চাল ও শস্যসহ খাবার রয়েছে।’

সম্প্রতি ইয়েমেন থেকে সৌ্দি আরবের রাজধানী রিয়াদকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হুথি বিদ্রোহীরা। আকাশেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করলেও সৌদি সরকার অভিযোগ করে ইরানের সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়েই হামলা চালিয়েছে হুথিরা। এরপর ইয়েমেনের সব বন্দরে অবরোধ আরোপ সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। তাদের যুক্তি ইরানের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতেই তারা এই অবরোধ আরোপ করেছে। তাদের দাবি, ত্রাণের আড়ালে ইয়েমেনে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাচার হচ্ছে। তবে ম্যাকগোল্ডরিক দাবি করেন, ‘অস্ত্র পাচারের কোনও প্রমাণ নেই। ত্রাণের মধ্যে কখনও অন্য কিছু পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘের ফ্লাইটগুলোরও একই অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবকে জানাচ্ছি, যদি বাণিজ্যিক চালানগুলো নিয়ে সন্দেহ থাকে, তাহলে তা আলাদা করে দিন। কিন্তু সব চালান বন্ধ করে দেবেন না।’