চাচার সুবাদে ফ্যামিলি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায় আকায়েদ

ডিভি লটারি পাওয়া চাচার সুবাদেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিল নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে বাস টার্মিনালে সোমবারের বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্দেহভাজন আকায়েদ উল্লাহ। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

আকায়েদ উল্লাহওই কর্মকর্তা জানান, ফ্যামিলি ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় আমেরিকায় পাড়ি জমায় আকায়েদ। তার স্পন্সর ছিল ডাইভার্সিটি লটারি (ডিভি) ভিসা পাওয়া তার চাচা।

প্রায় সাত বছর আগে অভিবাসী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়ে স্থায়ী হয় ২৭ বছরের আকায়েদ। সে গ্রিন কার্ডধারী এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ নাগরিক।

ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস-এর পরিচালক ফ্রান্সিস সিসনা। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ‘একজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে তার পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে সে এই দেশে আসে। তার জাতীয়তা ছিল বাংলাদেশ। ওই মার্কিন নাগরিক তার চাচা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ওই নাগরিক অনেক বছর আগে একটি ভিসা লটারি জিতে এই দেশে এসেছিলেন’

আটক আকায়েদ উল্লাহর বিরুদ্ধে এরইমধ্যে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। এতে বলা হয়, অবৈধ অস্ত্র রাখা, সন্ত্রাসবাদে সমর্থনমূলক তৎপরতায় যুক্ত থাকা এবং সন্ত্রাসের হুমকি তৈরির দায়ে আইন অনুযায়ী আকায়েদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা জানান, ২০১৪ সাল থেকেই মৌলবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে আকায়েদ।

আদালতে জমা দেওয়া প্রসিকিউটরদের নথিতে বলা হয়েছে, আকায়েদ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের জন্যই সে এ কাজ করেছে।

সে সিরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন বিমান হামলার জবাবে হামলা পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে।

ইউরোপে বড়দিনকে ঘিরে চালানো সন্ত্রাসী হামলা প্রত্যক্ষ করে এতে অনুপ্রাণিত হয় আকায়েদ। সে বাস টার্মিনালের দেয়ালে উৎসবের পোস্টার দেখে সেখানে হামলা চালাতে উদ্যোগী হয়।

এদিকে ম্যানহাটনে সংঘটিত হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির ফলাফল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন অভিবাসন নীতিতে আত্মীয়স্বজনের বদৌলতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে কংগ্রেসকে সেই সুযোগ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।

কংগ্রেসের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘পরিবারভুক্তদের অভিবাসী হওয়ার সুযোগ নিয়েই (ফ্যামিলি চেইন নীতি) এই সন্দেহভাজন জঙ্গি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সক্ষম হয়েছে। এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমেরিকার অবশ্যই অভিবাসন নীতিকে সুরক্ষিত করা উচিত। এই নীতির কারণেই খুবই ভয়াবহ ব্যক্তিরা নির্বিচারে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে সক্ষম হয়।’

নিউ ইয়র্ক সিটি ট্যাক্সি এবং লিমোজিন কমিশন জানিয়েছে, ‘আকায়েদ  ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করতো। ২০১২ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত তার নামে ট্যাক্সির লাইসেন্স করা ছিল।’