সৌদি যুবরাজকে ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণ

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানকে ইসরায়েল সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে তেল আবিব। ইসরায়েলের গোয়েন্দামন্ত্রী ইয়িসরায়েল কাটজ সৌদি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এই আমন্ত্রণ জানান। পাশাপাশি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে রিয়াদ সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজকে অনুরোধ করেছেন তিনি। কাটজের মুখপাত্র আরিয়ে শাইলচারের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি জানিয়েছে।

সৌদি যুবরাজ
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিবাদে যখন বিশ্বব্যাপী তীব্র বিক্ষোভ চলছে তখন এই আমন্ত্রণ জানানো হলো। আরিয়ে শালচার জানান, গোয়েন্দামন্ত্রী কাটজ সৌদি দৈনিক ‘এলাফ’কে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে সেই আমন্ত্রণের খবর প্রকাশ করেনি সংবাদমাধ্যমটি। কেন খবরটি প্রকাশ হয়নি তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি শাইলচার। তিনি দাবি করেন, এলাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়াদে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সৌদি বাদশাহকে অনুরোধ জানিয়েছেন কাটজ। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকেও ইসরায়েল সফরের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বর বুধবার জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। ট্রাম্পের ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছিল, রিয়াদ আসলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে অংশীদার হিসেবেই কাজ করছে।এছাড়া সৌদি যুবরাজের কথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে মার্কিন মদদ, মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে ট্রাম্পের অবস্থান মানতে মাহমুদ আব্বাসকে চাপ দেওয়া এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে বসে মার্কিন স্টাইলের শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আলোচনার মতো বিষয়গুলোও সামনে আসে পূর্ববর্তী কিছু প্রতিবেদনে। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের যে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে এগুচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে সেটি নতুন কিছু নয়। গত নভেম্বরে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের রিয়াদ সফরকালে তাকে এ পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ইহুদি ধর্মাবলম্বী জামাতা জ্যারেড কুশনার ২০১৮ সালের গোঁড়ার দিকে একটি শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাশা করছেন। এ বিষয়ে অবস্থান জানাতে ফিলিস্তিনি নেতাকে দুই মাসের সময় বেঁধে দেন সৌদি যুবরাজ।

সৌদি প্রস্তাবে বলা হয়েছে,ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা না রেখে এবং জেরুজালেমকে রাজধানীর স্বীকৃতি না দিয়ে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা হবে। পূর্ব জেরুজালেমের বদলে এ রাষ্ট্রের রাজধানী হবে আবু দিস নামের একটি ফিলিস্তিনি এলাকা।

সৌদি আরবের সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলের গোপন সম্পর্কের বিষয়টিও এখন নতুন কিছু নয়। এ বছরের নভেম্বরে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন,ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিৎজ। দেশটির ‘আর্মি রেডিও’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অনেক মুসলিম ও আরব দেশের সঙ্গে আমাদের সত্যিকার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই। সৌদি আরবই চেয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে তার সম্পর্ক গোপন রাখতে। এতে আমাদের কোনও সমস্যা ছিল না।’ ইসরায়েলি মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর সৌদি আরবও বিষয়টি অস্বীকার করেনি।