হামাসের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে গাজা উপত্যকায় জনতার ঢল

জেরুজালেম নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে নিজেদের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-কাতিবা শহরে মিছিলের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে তারা। তাদের সঙ্গে সামিল হয় গাজার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। এমন এক সময়ে হামাসের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় হামাসের পক্ষ থেকে তৃতীয় ইন্তিফাদার ডাক দেওয়া হয়েছে।

গাজা উপতক্যয় ফিলিস্তিনি নারীদের মিছিলআরববিশ্বে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হয় ১৯৮৭ সালে। ইন্তিফাদা নামের সেই সময় শুরু হওয়া গণ-আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পরের বছর হামাসের আত্মপ্রকাশ। ধর্মভিত্তিক সংগঠনের পরিচয়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে দলটির। হামাসের প্রাথমিক ঘোষণাপত্র ছিল ইহুদিবিদ্বেষে ঠাঁসা। তবে দলটি ফিলিস্তিনিদের জাতিরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা জোরালো করে তুলতে শুরু করার পর সেই পরিস্থিতির সমান্তরালে বদলে যেতে থাকে হামাস। ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নকে সরাসরি সামনে আনতে পারায় ফাতাহকে ছাপিয়ে গাজায় জনপ্রিয়তা পায় হামাস। ২০০৬ সালে তারা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। 

আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে উপলক্ষ্য করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জনতা এদিন গাজা উপত্যকার আল কাতিবা শহরে জড়ো হয়। কপালে হামাসের পতাকা বেঁধে হামাসের মিছিলে সামিল হয় নারী-পুরুষ-শিশুরা।

 হামাস সদস্যরা

প্রথম ইন্তিফাদার (গণজাগরণ) সময় থেকেই পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের প্রতিরোধ জারি রয়েছে। প্রথম ইন্তিফাদার সময়ে হামাসের প্রাথমিক ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছিল, ‘ইসরায়েলকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করাটাই সংগঠনের মূল তবে ফিলিস্তিনি জনতার জাতিসত্তার বোধ জাতিরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা জোরালো করে তুলতে শুরু করার পর, সেই পরিস্থিতির সমান্তরালে বদলে যেতে থাকে হামাস। মূলত দ্বিতীয় ইন্তিফাদা, বা আল আকসা ইন্তিফাদার সময়কালে (২০০০–২০০৫) হামাসের রাজনীতিতে এক বিশেষ রূপান্তর ঘটতে শুরু করে। এ সময়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের মতাদর্শিক অবস্থানকে ছাপিয়ে যায় ফিলিস্তিনের জাতীয় মুক্তি আন্দোলন।

এমন এক সময়ে হামাসের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের রবিবারের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এবার জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে নতুন করে আরেকটি প্রতিরোধ যুদ্ধের (ইন্তিফাদা) ঘোষণা দিয়েছে তারা।