ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি নিহত, আহত শতাধিক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পূর্ব সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন ৩২ বছরের ইয়াসির সকার এবং ২৯ বছরের ইব্রাহিম আবু থুরাইয়া। গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন ১১১ জন। গাজায় আহতদের মধ্যে পাঁচজন এবং পশ্চিম তীরের রামাল্লায় আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

nonameফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কাদরা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছেন।

ইন্তিফাদা বা প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভে অংশ নেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী বাধা দিলে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

৬ ডিসেম্বর বুধবার জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে পশ্চিম তীর, জেরুজালেম, গাজা ও বেথলেহেমসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা।

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর ১৫ ডিসেম্বর ছিল দ্বিতীয় শুক্রবার। এদিন ট্রাম্পের নিন্দা এবং জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী উল্লেখ করে বিক্ষোভে অংশ নেন ফিলিস্তিনিরা। তারা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংকটের সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হলো জেরুজালেম। ১৯৮০ সালে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর সমর্থন দেয়নি। আর ফিলিস্তিনিরা চায় দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেন তাদের রাজধানী হয়। এ কারণে সেখানে কোনও দেশ দূতাবাস স্থাপন করেনি। সবগুলো দূতাবাসই তেল আবিবে অবস্থিত। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির বাইরে গিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। আর ফিলিস্তিনে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর। এরপরও প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা ইন্তিফাদার অন্যতম হাতিয়ার পাথর আর গুলতি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাস।